বাঁকুড়া: রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। হঠাৎই কেমন একটা মোচড় দিয়ে ওঠে পেট। শৌচকর্ম করতে পাশের ঝোপে যান তিনি। এরপর যে ঘটনার মুখোমুখি তাঁকে পড়তে হল, এখনও গায়ে কাঁটা দিচ্ছে ভাবলেই। শৌচকর্ম করতে বসেই হঠাৎ কানে আসে শিশুর কান্না। গিয়ে দেখেন, একটি কন্যাসন্তান পড়ে রয়েছে আগাছার আড়ালে। আর তাকে ঘিরে রয়েছে পিঁপড়ের দল। ওই ব্যক্তিই শিশুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে ছোটেন। বাঁকুড়ার (Bankura) জয়পুর থানার হিজলডিহায় ক্যানালের ধারে একটি ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুকে। পরে জয়পুর থানার সহযোগিতায় চাইল্ড লাইন শিশুটিকে উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার জয়পুর থানার হিজলডিহা গ্রামের পাশে সেচ ক্যানালের ধার দিয়ে যাচ্ছিলেন কাশীচটার আকবর আলি ভাঙি। তিনিই শৌচকর্ম করতে ঝোপের মধ্যে যান। সেখানেই বাচ্চার কান্নার শব্দ শোনেন তিনি। ঝোপের কাছে হাজির হয়ে তিনি দেখেন কাপড়ে মোড়া একটি শিশু পড়ে রয়েছে। আকবর আলি ভাঙির কথায়, “রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পেটটা কেমন করে ওঠে। এরপরই আমি শৌচকর্ম করতে ওই ঝোপের ধারে যাই। সেখানেই শুনি বাচ্চার কান্নার আওয়াজ। আমি উঠে গিয়ে দেখি কুশগাছের আড়ালে বাচ্চাটা পড়ে আছে। দেখে খুব মায়া লাগল। চারদিকে তখন পিঁপড়ে ভরা। আমিই পরিষ্কার করে নিয়ে কোলে তুলে নিয়ে থানায় চলে যাই। আমি থানায় বলি, আমাকে দিলে আমি এই বাচ্চাকে নিজের মেয়ের মতো করে মানুষ করব।”
এরপরই পুলিশের উদ্যোগে চাইল্ড লাইনে পাঠানো হয় শিশুটিকে। বাঁকুড়া জেলার চাইল্ড লাইনের কোঅর্ডিনেটর সজল শীল বলেন, “জয়পুর থানার ওসির কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা যাই। বাচ্চাটিকে বিষ্ণুুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। দেখে একদিনের বাচ্চা মনে হচ্ছে। আমাদের একটাই অনুরোধ বাচ্চাদের এভাবে না ফেলে রেখে আপনারা বিপিএইচসির পালনায় যোগাযোগ করুন। প্রত্যেক বিপিএইচসিতে এটা আছে। পালনায় যদি বাচ্চাকে দিয়ে দেন তাহলে ওরাও প্রাণে বাঁচে।”