বাঁকুড়া: বন দফতরের অনুমতি না নিয়েই লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ পাচার হচ্ছে। আবার তাতে নাকি মদত রয়েছে পঞ্চায়েতেও। অভিযোগ ঘিরে সরগরম বাঁকুড়ার তালডাংরা এলাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের মদতেই চলছে গাছ পাচার। পাচার রুখতে এলাকাবাসী আন্দোলনে নামতেই টনক নড়ে বন দফতরের। বন্ধ করে দেওয়া হয় গাছ কাটা। পঞ্চায়েত অবশ্য গাছ পাচারে মদত দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বাঁকুড়ার তালডাংরা থানার খালগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগাবাঁধ গ্রাম লাগোয়া কংসাবতী সেচ ক্যানালের পাড়ে একসময় স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো হয়। সম্প্রতি স্থানীয়দের নজরে পড়ে নির্বিচারে গাছ কেটে গাড়ি বোঝাই করে অন্যত্র পাচার করা হচ্ছে। এরপরই স্থানীয়রা বন দফতরের দ্বারস্থ হলে জানতে পারেন বন দফতরের তরফে গাছ কাটার কোনও অনুমতিই দেওয়া হয়নি।
এরপর স্থানীয়রা গাছ কাটা ও পাচারের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন। বিভিন্ন সরকারি দফতরে অভিযোগ জানানো হয়। তারপর নড়েচড়ে বসে বন দফতর। ওই এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় গাছ কাটা ও পাচার। কিন্তু ততদিনে ওই এলাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকার গাছ উধাও হয়ে গেছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। কার অনুমতিতে ওই এলাকায় গাছ কাটা হচ্ছিল? বন দফতরের দাবি, ওই গাছ কাটার জন্য তাদের দফতরের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।
গাছ কাটা ও অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র বন দফতরই যেহেতু অনুমতি দেওয়ার অধিকারী, সেক্ষেত্রে গাছগুলি কার অনুমতিতে কাটা হচ্ছিল তার উত্তর মেলেনি। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের মদতেই এই গাছ কাটা ও তা পাচার করা হচ্ছিল।
স্থানীয় বিজেপির বাঁকুড়া জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডলের অভিযোগ, “তৃণমূল পরিচালিত খালগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মদত ছাড়া ওই এলাকা থেকে কোনওভাবেই গাছ পাচার সম্ভব নয়। তৃনমূল পঞ্চায়েতের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে এই গাছ চুরির ঘটনায়।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
খালগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পূরবী মালের দাবি, গাছগুলি বড় হওয়ার পর সম্প্রতি ওই এলাকার গাছ বিক্রির টেন্ডার করা হয়েছে। খোলা টেন্ডারে সর্বাধিক ৫২ লক্ষ টাকা দাম দেওয়ায় ধীরেন বেরা ও সুবোধ সুর নামের দু’জনকে ওই গাছগুলির বরাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও বন দফতরের অনুমতি না মেলায় গাছগুলি কাটার কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় কে বা কারা ওই গাছ কাটছে তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান।