বাঁকুড়া: ই-টেন্ডার না করে পেটোয়া ঠিকাদারদের দিয়ে সরকারি প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকার কাজ করিয়ে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই উপপ্রধান-সহ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদেরই একাংশ। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিযোগ প্রমাণ হলে পদক্ষেপ করা হবে। বিজেপির কটাক্ষ, কাটমানির ভাগ নিয়ে বিবাদের জেরেই এমন ঘটনা। বাঁকুড়ার তৃণমূল পরিচালিত অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান-সহ একাংশ সদস্য। তাঁদের বক্তব্য, ২০২১ -২২ অর্থবর্ষে পঞ্চদশ পরিকল্পনা খাতে অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েত ২২ লক্ষ টাকারও বেশি বরাদ্দ পায়। দীর্ঘদিন সেই টাকা খরচ হয়নি। পরবর্তীতে রাজ্য সরকার এক লক্ষ টাকার বেশি বরাদ্দ খরচের জন্য ই-টেন্ডারের নিয়ম চালু করলে তড়িঘড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পঞ্চায়েতের সদস্যদের অন্ধকারে রেখে ব্যাকডেটে টেন্ডার করে নিজের পেটোয়া ঠিকাদারদের ওই কাজ পাইয়ে দেন। কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ওই পঞ্চায়েত প্রধান ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাটমানি নেন বলেও অভিযোগ। অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্ত করে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
তবে, বিষয়টিকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের দাবি, অভিযোগ প্রমাণ হলে সে ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হবে। বিষ্ণপুরের তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “কোনও দুর্নীতি নিয়ে কেউ যদি প্রশাসনকে চিঠি দেন, প্রশাসন তার কাজ করবে। যদি প্রমাণ হয়, দল তাঁকে উপযুক্ত শাস্তি দেবে।” অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েতে যে টাকাগুলো আসে, স্কিমের টাকাগুলোর কাজ স্বচ্ছভাবে হচ্ছে না। ইটেন্ডার না করে নিজের লোককে কাজ দিচ্ছেন প্রধান।” যদিও অভিযুক্ত প্রধান গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “যে অভিযোগটা উঠছে, সেটা ভিত্তিহীন। মাথাটা ঠিক আছে কিনা, সেটাই দেখার রয়েছে।” বিজেপির কটাক্ষ, ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে আগেই অভিযোগ এনেছিল বিজেপি। এখন ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের গন্ডগোলে সেই অভিযোগেরই প্রমাণ মিলছে।