Bankura: ‘সব রাগ-অভিমান ভুলে…’, TMC-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বাউরি কালচারাল বোর্ডের চেয়ারম্যান বদল? খোঁচা বিজেপির
Bankura: ২০২১ সালে রাজ্যে বাউরি কালচারাল বোর্ড গঠনের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাঁকুড়ার দাপুটে তৃণমূল নেতা দেবদাস দাসকে এই বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। কিন্তু ৪ বছর যেতে না যেতেই সম্প্রতি রাতারাতি তাঁকে সরিয়ে ওই পদে বসেন তৃণমূল নেতা পেশায় শিক্ষক দীপক দুলে।

বাঁকুড়া: ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে বড়সড় রদবদল বাউরি কালচারাল বোর্ডে। ওই বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে দেবদাস দাসকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হল দীপক দুলেকে। নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যেই পরিষ্কার, অন্তর্কলহে জর্জরিত বাউরি কালচারাল বোর্ড। তার জেরেই কি এই রদবদল? জল্পনা তুঙ্গে।
এ রাজ্যের অন্যতম বড় জনজাতি বাউরি। সারা রাজ্যে বাউরি জনজাতির মানুষের সংখ্যা বেশ কয়েক লক্ষ। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পুর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম ও হুগলি জেলার প্রায় ৬৮টি বিধানসভা আসনের অন্যতম নিয়ন্ত্রক এই জনজাতি। এই জনজাতিকে নিজেদের পক্ষে টানতে ২০২১ সালে রাজ্যে বাউরি কালচারাল বোর্ড গঠনের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাঁকুড়ার দাপুটে তৃণমূল নেতা দেবদাস দাসকে এই বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। কিন্তু ৪ বছর যেতে না যেতেই সম্প্রতি রাতারাতি তাঁকে সরিয়ে ওই পদে বসেন তৃণমূল নেতা পেশায় শিক্ষক দীপক দুলে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে অপসারিত দেবদাস দাসকে।
২০২৬ এর বিধানসভা ভোটের আগে কেন এই রদবদল? বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা বোর্ডের ক্ষমতার রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে অন্তর্কলহই এর অন্যতম কারণ। গতকাল বাঁকুড়ার তৃণমূল ভবনে নবনিযুক্ত বোর্ড চেয়ারম্যানের সংবর্ধনা সভায় নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যে সেই অন্তর্কলহের ছবি আরও স্পষ্ট হয়েছে। ওই সভায় বোর্ড চেয়ারম্যান দীপক দুলে অপসারিত দেবদাস দাসকে উদ্দেশ করে বলেন, “সব রাগ-অভিমান ভুলে আপনি শুধু সমাজের কথা ভাবুন। আমার সঙ্গে হাত মেলান। অনেকে কান ভাঙানি দিয়ে আপনার ও আমার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করবে। আপনার ও আমার অনুগামীদের মধ্যে লড়াই হবে। কিন্তু আমাদের দু’জনকেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামী বিধানসভায় লড়াই করতে হবে। বাঁকুড়ার ১২টা বিধানসভা আসনই জিততে হবে।” নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের দাবি, আন্তরিকতা, তৎপরতা ও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে বোর্ডের উদ্দেশ্য। আগামীদিনে সেই ভুল শুধরে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন অপসারিত বোর্ড চেয়ারম্যান দেবদাস দাস। সংবর্ধনা সভায় দীপক দলে যখন বক্তব্য রাখছিলেন, তখন চুপ করে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
এই নিয়ে শাসকদলকে তোপ দেগেছে বিরোধীরা। বিজেপির দাবি, বোর্ডের কর্মকর্তাদের একটাই উদ্দেশ্য, সরকারি অর্থ লুটেপুটে খাওয়া। বিজেপির বাঁকুড়ার প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, “এই বোর্ড সমাজের জন্য কোনও কাজই করেনি। এখন বাউরি ভোট নিজেদের পক্ষে টানার জন্য বোর্ডের মুখ বদল করেছে তৃণমূল। কিন্তু তাতে তৃণমূল বাউরি সমাজের মন বদল করতে পারবে না। বাউরি সমাজ বিজেপির সঙ্গে আছে। কারণ, ভারতীয় জনতা পার্টি সর্বদা বাউরিদের সঙ্গে থাকে।”

