বাঁকুড়া: ‘মমতা ব্যানার্জিকে (Mamata Banerjee) যাঁরা মা বলেছেন, তাঁরা বিদায় নিয়েছেন। এবার কল্যাণ ব্যানার্জি (Kalyan Banerjee) বিদায় নেবেন’। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের দ্বৈরথে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য সৌমিত্র খাঁয়ের (Soumitra Khan)। একসময় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা সাংসদ টানলেন ভারতী ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়ের প্রসঙ্গ।
কল্যাণ-বিতর্কে কটাক্ষ সৌমিত্রের:
“মমতা ব্যানার্জিকে কে যারা মা বলেছেন তাঁরাই বিদায় নিয়েছেন। এবার মমতা ব্যানার্জীর কাছের লোক কল্যাণ ব্যানার্জী বিদায় নেবেন’। শনিবার বাঁকুড়া থেকে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। ভারতী ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় এমনকী নিজের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘এঁরা সকলেই মমতা ব্যানার্জিকে ‘মা’ বলে পরে বিদায় নিয়েছেন। এবার মমতা ব্যানার্জির কাছের লোক কল্যাণ ব্যানার্জি বিদায় নেবেন’। এখানেই থামেননি তিনি।
সৌমিত্র আরও যোগ করেন, ‘বাঁকুড়া জেলার ছেলে কল্যাণ ব্যানার্জি। তাঁর লোকসভায় উত্থান ও তাঁর বক্তব্য মেনে নিতে পারছে না অনেকে। তাই তাঁকে সুপরিকল্পিতভাবে হঠানো হবে। এটা একটা সুপরিকল্পিত অধ্যায়। ভাইপো এবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ভাইপো রাজ চালু হয়ে গিয়েছে। আমরা যা তিন বছর আগে, ২০১৯ সালে বলেছি, আজ তা আমরা ঘটতে দেখছি’।
প্রসঙ্গত, কল্যাণ বিতর্কে এদিনও দলের নেতাদের সাবধান করেছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, দলের নির্দেশ অমান্য করে এ ধরনের মন্তব্য করলে সংশ্লিষ্ট নেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে তার পরেও বিতর্ক থেমে নেই। সোশ্যাল মিডিয়াতে কল্যাণের বিরুদ্ধে নানা প্রচার হয়েছে। তৃণমূলের তরফেই উঠেছে শ্রীরামপুরের সাংসদকে বদলানোর কথাও। তার পরেও শনিবারের বারবেলায় কল্যাণের কুশপুতুল পুড়িয়েছেন মদন মিত্রের অনুগামীরা। যদিও এদিন এ নিয়ে আর মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়াতে চায়নি তৃণমূল।
যে নিয়ে কল্যাণ বিতর্কের সূত্রপাত:
ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ডহারবারে এক বৈঠকের পর বলেছিলেন, এখন মেলা, খেলা, ভোট সব বন্ধ রাখা উচিত। দু’মাস সব বন্ধ রাখা উচিত। তাঁর কথায়, “মানুষ বাঁচলে আমরা বাঁচব। এটা অবশ্য আমার ব্যক্তিগত মত”। এই ‘ব্যক্তিগত মত’কেই খোঁচা দিয়ে বসেন বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কল্যাণের কথায়, “দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদটি সর্বক্ষণের। তাই এই পদে থেকে কারও ব্যক্তিগত কোনও মত থাকতে পারে না। অনেক বিষয়ে আমারও ব্যক্তিগত মত আছে। দলীয় শৃঙ্খলার কারণেই তা প্রকাশ্যে বলা যায় না। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধাচারণ। এভাবে রাজ্য সরকারকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বর্ষবরণের দিনে ডায়মন্ড ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন যেখানে হয়েছিল সেখানে কয়েক হাজার মানুষ ছিলেন। মুম্বইয়ের গায়ককে এনে জলসা হয়েছিল। সেখানে কি সংক্রমণের সম্ভাবনা ছিল না?” কল্যাণের এই মন্তব্যের পরই তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয় জলঘোলা। আর এই সুযোগে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না সৌমিত্র খাঁ।