বাঁকুড়া: বন ও বন্যপ্রাণ রক্ষায় জঙ্গলে আগুন রুখতে এবার আরও কড়া হচ্ছে বন দফতর। নিয়মিত নজরদারি চালাতে সাহায্য নেওয়া হবে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের। নজরদারি চালানো হবে উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমেও। ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ আগুন লাগালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পথেও হাঁটতে চলেছে বন দফতর। বর্ষাকাল বাদ দিলে বছরের বাকি ঋতুগুলিতে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন জঙ্গলে ঝরা পাতায় আগুন লাগার ঘটনা প্রায় নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোনো না কোনো জঙ্গলে আগুন লাগার খবর মিলছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই আগুন লাগার পিছনে রয়েছে মানুষের হাত। কোথাও পর্যটকরা অসচেতন ভাবে জঙ্গলে ছুঁড়ে ফেলছে জ্বলন্ত বিড়ি সিগারেট আবার কোথাও নিছক মজার ছলে অথবা উদ্যেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেউ বা কারা জঙ্গলের ঝরা শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সেই আগুনই ঝরা শুকনো পাতায় ছড়িয়ে পড়ছে জঙ্গল জুড়ে। এরফলে জঙ্গলের ছোট বড় গাছ ও লতা যেমন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনই ব্যাপক প্রভাব ফেলছে বণ্যপ্রাণের ক্ষেত্রেও। বাঁকুড়ার বিভিন্ন জঙ্গল মিলিয়ে এখন ৭২ টি হাতি রয়েছে। জঙ্গলে আগুন লাগলে সেই হাতির দল ভয় পেয়ে জঙ্গল ছেড়ে হানা দিচ্ছে লোকালয়ে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসল, ঘরবাড়ি। হাতির হানায় ঘটছে প্রাণহাণির মতো ঘটনাও।
তবে শুধু হাতির হানার ঘটনা বাড়ছে তাই নয় জঙ্গলের ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে বেঘোরে মারা যাচ্ছে শেয়াল, জঙলি বিড়াল, বিভিন্ন ধরনের সরীসৃপ, কীটপতঙ্গ। সামগ্রিক ভাবে ব্যপক প্রভাব পড়ছে জঙ্গলগুলির স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্রে। জঙ্গল এলাকায় আগুনের সেই ভয়াবহতায় এবার রাশ টানতে আরও বেশি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে বন দফতর।
জঙ্গলে আগুন লাগানোর বিষয়টি নজরদারির জন্য সাহায্য নেওয়া হচ্ছে প্রযুক্তিরও। সেক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানো হবে বলে জানিয়েছে বন দফতর। পাশাপাশি জঙ্গলের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে লাগাতার মাইক প্রচার ও পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের সচেতন করার কাজ চালানো হচ্ছে বনদফতরের তরফে। জঙ্গলে আগুন ঠেকাতে বন দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটক ও পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন।