বাঁকুড়া: আর যেন অগ্নিমূল্য শব্দটা যথাযোগ্য হচ্ছে বাজারে চড়া দাম বোঝাতে। কারণ এবছর লক্ষ্মীপুজোর আগে ‘মূল্যসূচী’ আঁতকে ওঠার মত বাঁকুড়ার একাধিক বাজারে। বলা ভাল, জেলার বাজারগুলি পুড়ছে দাউদাউ করে। সেই তাপেই কালঘাম ছুটছে মধ্যবিত্তের। ব্যাগ হাতে বাজার এলেও তা কানায় কানায় ভর্তি করে বাড়ি ফিরতে পারছেন না বেশিরভাগ ক্রেতাই। এককথায় কোজাগরী আরাধনায় গৃহস্থ বিধ্বস্ত।
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর আগে ফুল, ফল, সবজি, কোনও কিছুতেই আগুন লাগতে বাকি নেই বাঁকুড়ায়। এমনিতেই এইসবের দাম একটু চড়া ছিলই। তার পরেও লক্ষ্মীপুজোর জন্য চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাস! আর পায় কে। চড়চড়িয়ে বেড়েছে দাম। এমতাবস্থায় লক্ষ্মীপুজোর বাজার সারতে রীতিমত কালঘাম ছুটছে মধ্যবিত্ত গৃহস্থের।
রবিবার পুজো। তাই শনিবার সকাল থেকেই বাঁকুড়ার চকবাজার, মনোহরতলা, মাচানতলা, কৃষকবাজার সর্বত্রই ভিড় উপচে পড়ছে। সবজিবাজারে কিলো প্রতি পটল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচালঙ্কা ৭০, ফুলকপি ৮০ থেকে একশো টাকা, মুলো ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাঁধাকপির বাজারদর কিলোপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, টমেটো ৬৫ টাকা, শসা – ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও বেগুন কিলোপ্রতি ৩০ টাকা দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। একই অবস্থা ফলের বাজারে। সেখানে দরপত্র পদে পদে ঘা দিচ্ছে ক্রেতার পকেটে। আপেল ১২০ টাকা, ন্যাসপাতি ১২০ টাকা, মুসম্বি ১০০ টাকা, নারকেল ৬০ টাকা, পেয়ারা ১০০ টাকা, পানিফল ৮০ টাকা কিলোপ্রতি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন কলার দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও একটি মাঝারি আকারের বাতাবি লেবুর দাম ৪০ টাকা।
গতবছরও ছোট আকারের লক্ষ্মী প্রতিমার দাম যেখানে ছিল দেড়শো থেকে দুশো টাকা এবার সেই প্রতিমারই দাম বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বিক্রেতারা সকলেই একবাক্যে মানছেন লক্ষ্মীপুজোর জন্য বাজারদর চড়েছে। তবে অগ্নিমূল্য এই বাজারদরে পুজোর কেনাকাটা সারতে রীতিমত হাত পুড়ছে মধ্যবিত্ত গৃহস্থের। অনেককেই বরাদ্দ পরিমাণ কাটছাঁট করে বাজেট সামাল দিতে হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, চলতি বছর সময়ে বৃষ্টি না হওয়া ও অসময়ে ভারী বৃষ্টির জেরে সবজির ফলন ভাল হয়নি। এর সাথে জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে বেড়েছে পরিবহণ খরচও। আর তার জেরেই কিছুটা দাম বেড়েছে সব সামগ্রীর।