বাঁকুড়া: একুশ শতকে দাঁড়িয়েও এমন কুসংস্কার। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াকে ঝাড়-ফুঁকের নামে লাগাতার অত্যাচারের অভিযোগ গুনিনের বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গেলে বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের গালিগালাজ ও হুমকির মুখে পড়তে হল।
কী ঘটেছে?
বাঁকুড়ার ঘটনা। সেখানে সপ্তম শ্রেণির এক পড়ুয়াকে ভূতে ধরেছে দাবি তুলে তার উপর ওঝা-গুনিনের চলল অকথ্য অত্যাচার। বাধা দিতে গিয়ে ওঝা, গুনিন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ল বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরাও। আজ সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাউরী পাড়ায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গতকাল সন্ধ্যে নাগাদ থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে মেজিয়া থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা তেলেন্ডি পুরুনিয়া হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। মেয়েটিকে ভূতে ধরেছে এমনটাই আশঙ্কা করেছিল পরিবারের সদস্যরা।
ছাত্রীকে ভূতে ধরেছে এই আশঙ্কায় তাঁর পরিবারের লোকজন তলব করে বেলিয়াতোড় থানার গদারডিহি এলাকার এক মহিলা ওঝাকে। এরপর আজ সকালে ওই মহিলা ওঝা দুই পুরুষ সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে রামচন্দ্রপুর গ্রামে যায়। ছাত্রীর বাড়ির অদূরে শুরু হয় পুজা অর্চনা। ভূত তাড়ানোর নামে ছাত্রীর উপর অকথ্য অত্যাচার চলতে থাকে বলেও অভিযোগ।
ঘটনার খবর পেয়ে ওই গ্রামে যান পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে তাঁদের ওঝার কবল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা হলেও অভিযোগ ওই ওঝা, তাঁর সহযোগী এবং গ্রামবাসীরা একত্রিত ভাবে বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের লক্ষ করে ব্যাপক গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। বিজ্ঞানমঞ্চের তরফে মেজিয়া থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হলে মেজিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনওক্রমে বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের গ্রাম থেকে উদ্ধার করে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি ছাত্রীর পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। বিজ্ঞান কর্মী বলেন, ‘এই পরিস্থিতিগুলি আমাদের শক্তহাতে দমন করতে হবে। বাধা আসবে। কিন্তু সেই বাধাগুলিকে কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। পরিস্থিতি খুব খারাপ ওই এলাকার। যেভাবে একটি নাবালিকার সঙ্গে অত্যাচার করা হচ্ছে আমরা বাধা দিতে গিয়েছিলাম। তবে আমাদেরকেই মারধর করা হয়।’