বাঁকুড়া: পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ পঞ্চায়েত ভোট। তার জন্য চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি। সভামঞ্চ থেকে অভিষেক বার্তা দিয়েছিলেন যে, তৃণমূল কারোর করে খাওয়ার জায়গা নয়। ঠিকাদারি করলে তৃণমূল করা যাবে না। তোলাবাজি, গোষ্ঠীকোন্দলের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন তিনি। কিন্তু এই সব বার্তা কি আদৌ মেনে চলছেন তৃণমূল কর্মীরা? বাঁকুড়ায় ঘটনা দেখলে বোঝা যায় উত্তর না। দাবিমতো তোলা না দেওয়ায় বেসরকারি কারখানার আধিকারিককে রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করার অভিযোগে গ্রেফতার তিন তৃণমূল কর্মী।
গতকাল ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার চৌশাল এলাকার। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে পাওয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গতকাল রাত্রিবেলাই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত গোপাল গরাই, ভোলানাথ মণ্ডল ও মহাদেব মণ্ডল এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। আজ তাদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হবে। ঘটনায় রামপদ কর্মকার নামের আহত ওই কারখানা কর্তাকে গঙ্গাজলঘাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিল্পক্ষেত্রে গোলমাল না পাকানোর জন্য দলীয় কর্মীদের বারেবারে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও শুধুমাত্র দাবি মতো তোলা না দেওয়ায় এক কারখানা কর্তাকে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনায় বাঁকুড়ার শিল্প ও ব্যবসায়ী মহলে বিরুপ প্রভাব পড়েছে।
জানা গিয়েছে, চৌশাল এলাকার বেসরকারি ওই ফেরো এলাকায় কারখানার তরফে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন মিলে বেশ কিছুদিন ধরেই কারখানা থেকে তোলা দাবি করে আসছিল বলে অভিযোগ। তোলা না দেওয়ায় কারখানা কর্তৃপক্ষকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, গতকাল দুপুরে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে একটি গাড়িতে করে কারখানায় কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন কারখানার আধিকারিক রামপদ কর্মকার। অভিযোগ কারখানায় ঢোকার কিছুটা আগে জনা দশেক বাইক আরোহী তাঁদের গাড়ি আটকায়। জোর করে রামপদ কর্মকারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে মারধর করে।
হামলাকারীদের কয়েকজনকে চিনতে পেরে তাদের নামে গঙ্গাজলঘাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পেতেই দ্রুত পদক্ষেপ করে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতেরা স্থানীয় ভাবে তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। যদিও, তৃণমূলের এক নেতার দাবি, ‘তোলা নয়, কাজ চাইতে গিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। সেই সময় কারখানার ম্যানেজার রামপদ কর্মকার নাটক করে আহত হওয়ার ভান করেছেন। কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’ তবে তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযুক্তদের তৃণমূল কর্মী হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, কেউ অন্যায় করলে তাঁকে প্রশ্রয় দেবে না তৃণমূল। আইন আইনের পথে চলবে।’