বাঁকুড়া: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, রাজ্য রাজনীতি বিতর্কে বর্তমানের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়বস্তুর শীর্ষে। এবার চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ খোদ প্রাথমিক শিক্ষকের বিরুদ্ধেই। বাঁকুড়ার সোনামুখীতে মাঝ রাস্তায় ওই শিক্ষককে ‘ধোলাই’ দিলেন চাকরিপ্রার্থী ও তার পরিবার। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে সোনামুখী থানা এলাকার রাধামোহনপুর পঞ্চায়েতের টাবাজার সংলগ্ন এলাকায়। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে অভিযুক্ত শিক্ষক জ্যোতির্ময় বাউরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে, গণধোলাইয়ের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও অভিযুক্ত বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
সোনামুখী থানা এলাকার ইসবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতা করেন জ্যোতির্ময় বাউরী। তবে তিনি দুর্গাপুরের বাসিন্দা। সম্প্রতি তিনি মনুই গ্রামের বাসিন্দা সুনীল কুমার মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির ছেলেকে স্বাস্থ্য দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে টোপ দেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তার জন্য ৯ লক্ষ টাকা দাবি করেন। যদিও ওই স্কুল শিক্ষকের দাবি প্রথমে মানতে চাননি সুনীলবাবু। কিন্তু ক্রমাগত তার সামনে বিভিন্ন লোভ দেখাতে থাকেন অভিযুক্ত। জ্যোতির্ময় এর পাতা ফাঁদে শেষমেষ পা দিয়ে দেন সুনীলবাবু। নিজের জমি বিক্রি করে মোট চার দফায় ছেলের চাকরির জন্য তুলে দেন ৮ লক্ষ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা। এরপর শুরু হয় জ্যোতির্ময়ের প্রতারণা।
অভিযোগ, স্কুল শিক্ষক প্রথমে কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নামে একটি ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরীপ্রার্থীর হাতে দেন। কিন্তু সেই চিঠি নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে সুনীলবাবু জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়ো। এরপর জ্যোতির্ময়কে চেপে ধরা হলে তিনি আবারও ভুয়ো নিয়োগপত্র দেন। এরপরই মঙ্গলবার ওই প্রাথমিক শিক্ষক স্কুলে যাওয়ার সময় টাকবাজার সংলগ্ন এলাকায় তার পথ আটকান সুনীলবাবু ও তার ছেলে। মাঝ রাস্তায় মারধর করা হয় তাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সোনামুখী থানার পুলিশ। অভিযুক্ত যে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় তারা। সুনীলবাবু জানান যে, চাকরি দেওয়ার নামে দীর্ঘদিন ধরে লোভ দেখানো হয়েছে তাদের। তিনি না বুঝেই সেই ফাঁদে পা দিয়েছেন। চাকরি না মেলায় তিনি একাধিকবার টাকাও ফেরত চেয়েছেন। কিন্তু তা মিলেনি। এদিকে, টাকার বদলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। চাকরিপ্রার্থীর পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে সোনামুখী থানার পুলিশ।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, ‘আমি টাকা নিইনি। আমি মাস্টার করি। আমার বিরুদ্ধে পুরোপুরি মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। ওরা কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি।’