সোনামুখী: শহরের একাংশে ক্রমশ বাড়ছে জন্ডিস আক্রান্তের সংখ্যা। ঘটনাস্থল বাঁকুড়ার সোনামুখী। শহরের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সংক্রমণের হার সর্বাধিক। মূলত আক্রান্ত হচ্ছে শিশু কিশোররা। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়তে থাকায় এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। পুরসভার নলবাহিত পানীয় জল থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে জন্ডিস। দাবি করে এই ঘটনার জন্য পুরপ্রধান ও উপ পুরপ্রধানের দ্বন্দ্বকেই দায়ী করছে বিরোধীরা। অভিযোগ উড়িয়ে পুরসভার দাবি বিষয়টি নজরে আসতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে পুরসভা।
রাজ্যের ছোট পুরসভাগুলির মধ্যে অন্যতম সোনামুখী পুরসভা। সম্প্রতি এই পুরসভার ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শুরু হয়েছে জন্ডিসের প্রকোপ। একের পর এক শিশু ও কিশোর জন্ডিসে আক্রান্ত হতে শুরু করে। কারো কারো ক্ষেত্রে অসুখ এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়েছে। ওই দু’টি ওয়ার্ড মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে মতান্তর থাকলেও প্রতিদিন যেভাবে নতুন নতুন আক্রান্তের খোঁজ মিলছে তাতে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের ধারণা পুরসভার নলবাহিত পানীয় জল থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে জন্ডিসের জীবানু। আতঙ্কে এলাকাবাসী পুরসভার নলবাহিত জল ছেড়ে স্থানীয় সাব মার্সিবল থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করছেন। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে নির্ভর করছেন কেনা জলের উপর।
এই অবস্থায় পুরসভার জলের ট্যাঙ্ক ও জলের পাইপ লাইন সাফাই ও জীবানুমুক্ত করার দাবি তুলছেন এলাকাবাসী। বিজেপির দাবি ওই দু’টি ওয়ার্ডে মিলিয়ে প্রায় শতাধিক মানুষ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন। এজন্য তাঁরা কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূল পরিচালিত পুরপ্রধান বনাম উপ পুরপ্রধানের দ্বন্দ্বকে। বিজেপির সোনামুখী বিধানসভার কনভেনার তাপস রুদ্র বলেন, “ওদের ঝামেলার জন্য পরিষেবা মিলছে না। পানীয় জল নোংরা। সেই কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।”
বিজেপির দাবি পুরসভার ওই দুই কর্তার দ্বন্দ্বে পুরপরিষেবার হাল অত্যন্ত বেহাল। সে কারণেই এমন অসুখ মহামারীর আকার নিচ্ছে। যদিও, পুরপ্রধান সন্তোষ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, বিজেপি-র এই অভিযোগকে হাস্যকর বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি ঘটনার কথা জানার পরই পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করছেন। এলাকা থেকে নলবাহিত পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “জন্ডিস হচ্ছে এটা ঠিক। তবে স্বাস্থ্য কর্মীরা সচেতনার কাজ করছেন। জানার পরই পুরসভা কাজ করছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, জল পরীক্ষার পর জানা গিয়েছে পুরসভার নলবাহিত পানীয় জল সম্পূর্ণ নিরাপদ। বিজেপি রাজনৈতিক কারণে এই ঘটনাকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা ফৌজদারি আইন অনুযায়ী অপরাধ।