বাঁকুড়া: জেলায়-জেলায় শাকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের খবর আকছাড় উঠে আসে। এবার সংযোজন বাঁকুড়া। পুর ভোটের আগে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে রীতিমত সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। এক মঞ্চেই দল বদল করা বিধায়ক ও পুর প্রশাসকের তির্যক মন্তব্যে উত্তেজনা ঘাসফুল শিবিরে।
পুরসভা ভোট এগিয়ে আসতেই অন্তর্কলহে জেরবার হয়েছিল পদ্ম শিবির। বিষ্ণুপুরে এবার সেই একই পথে হাঁটল শাসকদল তৃণমূল। একই মঞ্চ থেকে দল বদল করা বিধায়ক ও পুর প্রশাসকের একে অপরকে লক্ষ করে তির্যক মন্তব্যে সরগরম প্রাচীন মল্লরাজধানী বিষ্ণুপুরের রাজনীতি।
গত বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়ে দল বদলে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে বিজেপির প্রার্থী হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তন্ময় ঘোষ। তৃণমূলের প্রার্থী হন অর্চিতা বিদ। বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে পরে বিধায়ক তন্ময় ঘোষ যোগ দেন আবার তৃণমূলে। এবার তৃণমূলের তরফে বিষ্ণুপুর পুরসভায় প্রশাসক পদে বসানো হয় গত বিধানসভা নির্বাচনে তন্ময় ঘোষের প্রতিদ্বন্দ্বী অর্চিতা বিদকে। দু’জনেই ঘাসফুল শিবিরে থাকলেও পুরসভা নির্বাচনের আগে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক ও পুর প্রশাসক যে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ তার প্রমাণ মিলল বৃহস্পতিবারের একটি সভায়।
বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ এলাকায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র ডাকা একটি সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে বিধায়ক ও পুর প্রশাসক নাম না করে একে অপরের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য ছুড়ে দেন। বিধায়ক বলেন, ‘সামনের পুরসভা নির্বাচনে মাসির রাগ-মা এর উপর ঝাড়বেন না।’ এরপর, সেই বক্তব্যে নিজেকে ভূমিপুত্র বলেও দাবি করেন বিধায়ক। রাজনৈতিক মহলের ধারণা বিধায়ক নিজেকে ভূমিপুত্র পরিচয় দিয়ে আসলে বড়জোড়ার বাসিন্দা ও বহিরাগত বলে পুর প্রশাসক অর্চিতা বিদকে খোঁচা দিয়েছেন।
এরপর ওই মঞ্চেই পালটা বিধায়কের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য করেন অর্চিতা বিদ। বলেন, ‘দলের নেত্রীর প্রতি আস্থা না রেখে অনেক মেরুদন্ডহীন মানুষ অন্য দলে নাম লিখিয়েছিলেন।’ এবার পুর প্রশাসকের করা মন্তব্য আসলে বিধায়কের প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যদিও পরে বিধায়ক ও পুর প্রশাসক দু’জনই মঞ্চে করা বক্তব্য বিশেষ কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা তির্যক মন্তব্য বলে মানতে নারাজ। তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের দাবি পরিবার বড় হলে একটু সমস্যা হয়েই থাকে। পুরসভায় দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলেই এই সমস্যা থাকবে না বলেই আশা তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের।
আরও পড়ুন: Doctors Death: এক সপ্তাহ আগেও দেখেছেন রোগী, ফের করোনা প্রাণ কাড়ল চিকিৎসকের