বাঁকুড়া: গ্রাম্য বিবাদ থেকে হাতাহাতি। এমনকী এলাকায় বোমাবাজিরও অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে যুব তৃণমূলের ব্লক সহ সভাপতির। এই ঘটনায় দু’ জন গুরুতর জখম হন। যদিও যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর দাবি, পুরোটাই মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। তাঁর ইমেজ নষ্ট করতে এই ঘটনা। বাঁকুড়ার মেজিয়া থানা (Mejia) এলাকার বেলবরিয়া গ্রামে রবিবার এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, এলাকার দুই বাসিন্দা উত্তম দুবে ও গদাধর দুবে। এই দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ। স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরে এলাকায় কীর্তন ছিল। বহু মানুষের সমাগমও হয় গ্রামে। সেইখানেই কথাকাটাকাটি থেকে বোমাবাজি, সমস্ত কিছু চলে বলে অভিযোগ। দু’ পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট মারতে থাকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে দু’পক্ষই।
গদাধর দুবের ছেলে বিপ্লব দুবে আবার যুব তৃণমূলের মেজিয়া ব্লক সহ সভাপতি। অভিযোগ, বিপ্লব তাঁদের বাড়ির ছাদ থেকে বোমাবাজি করেন। যদিও তাতে কেউ আহত হয়নি। তবে ইট লেগে দু’পক্ষেরই দু’জন আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মেজিয়া থানার পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, পাড়ায় সকলে মিলে একটা উৎসবের মেজাজে মেতেছিল। এই দলাদলি, ঝামেলার কারণে মানুষ ভয়ে ঘরে ঢুকে যান। পাড়ার মধ্যে এ ধরনের অশান্তি পুলিশ কঠোর হাতে দমন করুক বলে দাবি করেন এলাকার লোকজন।
যুব তৃণমূলের মেজিয়া ব্লক সহ সভাপতি বিপ্লব দুবে বলেন, “আমাদের গ্রামে একটা শিবপুজো হত। উত্তম দুবে সেটা করাতেন চার বছর ধরে। উনি লক্ষ লক্ষ টাকা তুলতেন এর জন্য। দু’ তিনটি ব্লক থেকে এই টাকা তোলেন। এরপরই গ্রামের ছেলেরা এসে বলে, গ্রামে কীর্তন করাতে হবে। আমরা উদ্যোগ নিয়ে করাই। যেহেতু উত্তম দুবের টাকা তোলার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেই রাগে আমাদের কয়েকজন ছেলের উপর হামলা করে। আমাদের বাড়িতেও চড়াও হয়েছে। আসলে টাকাটা আসা বন্ধ হয়ে গেছে তো। সেই রাগে এসব করছে।”
এ নিয়ে উত্তম দুবের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে হেমন্ত দুবে নামে এলাকার এক ব্যক্তি জানান, এসব টাকা তোলার অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। তাঁর কথায়, “এদিন কীর্তন চলছিল পাড়ায়। বিপ্লব দুবে, শ্রীমন্ত মাজি, বাপি মাজি, জয়ন্ত মাজি আমার ভাইপোকে মারধর করে। কোনওক্রমে ও পালিয়ে আসে। এরপরও ওদের লোকজন আমার ভাইপোকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়তে থাকে। পরে বোমাও ছোঁড়ে। পায়ে খুব লেগেছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কেন হঠাৎ হেমন্ত দুবের ভাইপোকে মারধরের অভিযোগ উঠল তা যেমন খতিয়ে দেখা হচ্ছে, উত্তম দুবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের আদৌ কোনও সত্যতা রয়েছে নাকি নিছক গ্রাম্য বিবাদের জেরে এই ঘটনা সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।