বাঁকুড়া: ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ নেই। শুধুই কি গরমের তীব্র অস্বস্তি? একেবারেই নয়। জলের অভাব, বাড়িতে বাচ্চা বৃদ্ধ থাকলে তাদের শাস্তি। একইসঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকায় আর্থিক ক্ষতিও হতে পারে কারও কারও। বাঁকুড়ার সারেঙ্গা এলাকার গুণধর গড়াই। বাড়িতে আইসক্রিম তৈরি করেন। শনিবার আইসক্রিম তৈরি করে রেখে কাজে বেরিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে দেখেন সব গলে জল। বহু কষ্টের পুঁজি দিয়ে এই ব্যবসা চালান। এমন ঘটনায় কপালে হাত তাঁর। হাউ হাউ করে কেঁদে চলেছেন। শুধু গুণধরই নন, শনিবার থেকে রবিবার বেলা পার করেও এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বাঁকুড়ার সারেঙ্গা থানা এলাকার মানুষকে। আর সহ্য করতে না পেরে বিকেলে পথে নামেন তাঁরা। রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান পি মোড়ে। অভিযোগ, ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন গোটা এলাকা। বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। এরপরই রবিবার বিকেলে সারেঙ্গা থানার পি মোড় এলাকায় বাঁকুড়া ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।
শনিবার বিকেলে বাঁকুড়ায় আছড়ে পড়ে কালবৈশাখী। দাবদাহের কষ্ট থেকে এই ঝড় বৃষ্টি খানিক স্বস্তি দেয় ঠিকই, তবে সমস্যা অন্য জায়গায়। ঝড়, বৃষ্টি মানেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়া। গেলে আসার কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। শনিবার বিকেল থেকে সারেঙ্গা থানা এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। পি মোড় ও আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম অন্ধকারে ডুবে। ২৪ ঘণ্টা পার করে গেলেও রবিবার বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি বলে এলাকার লোকজনের অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় অধিকাংশ বাড়িতে জলের পাম্প চালানো যায়নি। যা পরিস্থিতি তাতে শৌচকর্মের জলটুকুও নেই। গলা শুকোলেও এক ঢোকের বেশি জল খাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। অভিযোগ, বারবার বিদ্যুৎ দফতরে জানিয়েও কাজ হয়নি। দফতরের কর্মীদের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে এরপরই বাঁকুড়া ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
গুণধর গড়াই নামে এলাকার এক যুবক বলেন, “বাড়িতে আইসক্রিম বানিয়ে রেখে গিয়েছিলাম। একদিন হতে চলল লাইট নেই। সবটা গলে গিয়েছে। গোটা ঘর আইসক্রিমে ভরে গিয়েছে। বারবার বিদ্যুতের অফিসে জানিয়েছি। কেউ আসেনি।” পি মোড় এলাকার আরেক বাসিন্দা বাদল মণ্ডল বলেন, “শনিবার বিকেল চারটে থেকে কারেন্ট নেই। আজ পাঁচটা বেজে গেল এখনও আসেনি। আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তা অবরোধ করছি। বাথরুমে যাওয়ার জল নেই, খাওয়ার জল নেই। বাড়ির বাচ্চা, মহিলারা চরম সমস্যায়।” পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সারেঙ্গা থানার পুলিশ। তাঁদের উপরে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার মানুষ। থানার এক আধিকারিক অনুরোধ করেন, “আলো এলে তারপর আমি যাব কথা দিচ্ছি।” যদিও বিক্ষোভকারীদের দাবি, ২৪ ঘণ্টা ধরে এই পরিস্থিতি কেন চলছে, তার জবাব দিতে হবে।
আরও পড়ুন: TMC Internal Conflict: তৃণমূল বিধায়ক তো আসেন না, কার্যালয় রেখে লাভ কী? নাম মুছলেন দলের কর্মীরাই