বাঁকুড়া: কখনও মিড ডে মিলে (Mid Day Meal) অখাদ্য খাবার দেওয়ার অভিযোগ। কখনও আবার পঠনপাঠন নিয়ে নানাবিধ সমস্যা। রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে প্রায়শই উঠেছে একাধিক অভিযোগ। স্কুলের এই বিবিধ রোগ সামনে থেকে দেখছেন সরকারি শিক্ষকরা। নিজেরা সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করলেও, সন্তাদের কি সেই স্কুলে পড়ানোর সাহস পাচ্ছেন? এই প্রশ্ন নিয়ে TV9 বাংলা ঘুরেছে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে। আমরা গিয়েছিলাম বাঁকুড়ায়, যে জেলা প্রতি বছর মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় প্রথম দিকে থাকে। বাঁকুড়া শহরের একটি নামী স্কুলে ঢুঁ মারেন আমাদের প্রতিনিধি।
ওই স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা ২৯ জন। গ্রুপ সি কর্মীর সংখ্যা ৩ জন। গ্রুপ ডি কর্মীর সংখ্যা ২ জন। এই স্কুলের দু’জন শিক্ষক নিঃসন্তান, ৬ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর সন্তানদের বয়স অনেকটাই কম। তারা এখনও পড়াশোনা শুরু করেনি। বাকি শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের সন্তান-সন্ততি রয়েছে মোট ২৬ জন। এর মধ্যে তিনজন শিক্ষকের সন্তানেরা সরকারি স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছে। একজন শিক্ষকের সন্তান বেসরকারি স্কুল থেকে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে বর্তমানে কলেজ স্তরে পড়াশোনা করছে। বাকি যারা স্কুলে পড়াশোনা করছে তাদের মধ্যে ৯ জন সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে ও ৭ জন বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করছে।
আমাদের সঙ্গে কথা বলেন ওই স্কুলের এক শিক্ষক। তিনি তাঁর নিজের সন্তানকে বেসরকারি স্কুলে পড়াচ্ছেন। তিনি নিজেই সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “বেসরকারি স্কুলের পরিকাঠামো ভাল। তাছাড়া সিবিএসই পাঠক্রমে পড়ালে পরবর্তীতে সর্বভারতীয় পরীক্ষাগুলির ক্ষেত্রে সন্তান অনেকটা এগিয়ে থাকবে। সেই আশাতেই বেসরকারী স্কুলে পড়াচ্ছি।”
অপর একজন শিক্ষকের অকপট স্বীকারোক্তি, “সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে যত্ন করে পড়ানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকদের মানসিকতার অভাব রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতারও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। বহু শিক্ষকের মানসিকতা আসি যাই মাইনে পাই গোছের। সে জায়াগায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা পড়ুয়াদের প্রতি অনেক বেশি দায়বদ্ধ ও যত্নবান।”