বাঁকুড়া: ভালবেসে বিয়ে। পণ হিসাবে শ্বশুরবাড়ির লোকজন চেয়েছিল স্কুটি ও পঞ্চাশ হাজার টাকা। তা দিতে পারেনি মেয়ের বাড়ির পরিবার। আর তার জেরেই অকালেই চলে গেল তরতাজা প্রাণ। গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার স্বামী ও শাশুড়ি
বাঁকুড়ার ছাতনা থানার জিড়রা গ্রামের ঘটনা। সেখানেই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। বাপের বাড়ির দাবি, ভালোবেসে বিয়ে করলেও বিয়ের পর থেকে একটি স্কুটি ও পঞ্চাশ হাজার টাকা পণের দাবিতে মেয়েকে চাপ দিত মৃতার স্বামী ও শাশুড়ি। বিষয়টি লিখিত ভাবে ছাতনা থানায় জানালে পুলিশ মৃতার স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পুরুলিয়া হুড়া থানার কলাবনি গ্রামের বাসিন্দা সমাপ্তি মণ্ডল। মাস তিনেক আগে বাঁকুড়ার জিড়রা গ্রামের রমেন মণ্ডলকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। রমেন মণ্ডল স্থানীয় একটি বেসরকারি কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। গতকাল সকালে রমেন মণ্ডল কাজে যোগ দিতে বাড়ি থেকে বাইরে যান। অভিযোগ সেই ঘটনার কিছুক্ষণ পর আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান গৃহবধূ সমাপ্তি মণ্ডল।
দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির নির্মীয়মাণ একটি শৌচালয়ে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতেদেহ দেখতে পান মৃতার শাশুড়ি। এরপর স্বামী রমেন মণ্ডলকে টেলিফোনে খবর দেওয়া হলে তিনি বাড়ি ফিরে এসে গলার ফাঁস খুলে মৃতদেহটি নামিয়ে আনেন। ঘটনার খবর পেয়ে ছাতনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়।
খবর পেয়ে মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন গতকাল বিকালে স্থানীয় ছাতনা থানায় উপস্থিত হয়ে মৃতার স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে। মৃতার স্বামীর দাবি ঘটনার সময় তিনি বাইরে কাজে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ মৃতার স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃতার আত্মীয় বলেন, ‘বৈশাখ মাসে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের সময় ওরা কিছুই পণ চায়নি। তারপরও প্রয়োজনীয় জিনিস আমরা দিই। এরপর কয়েকদিন আগে পঞ্চাশ হাজার টাকা আর একটা স্কুটি দেওয়ার জন্য আমাদের কাছে ফোন আসে। আমরা বলেছিলাম দিয়ে দেব। তবে একটু সময় লাগবে। এরপর এই অবস্থা। আমাদের মনে ওকে খুন করেছে ওর শাশুড়ি আর স্বামী।’