Anubrata Mondal: ‘তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল’, কেষ্ট দিলেন ছাগলের ৩ নম্বর বাচ্চার উদাহরণও
একসময় ভোট এলে 'খেলা' দেখাতেন কেষ্ট। বিরোধীদের দেদার আক্রমণ শানাতেন। বাদ যেত না পুলিশ প্রশাসনের একাংশ। কখনও 'চড়াম-চড়াম' ঢাক বাজানোর কথা বলতেন, কখনও বা 'গুড় বাতাসার'দাওয়াই দিতেন। সেই অনুব্রতই যখন বলেন, তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল। সেই নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা যে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সিউড়ি: তৃণমূল আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী হচ্ছে সব জায়গায়। তবে বীরভূমে যেন এই বিজয়া সম্মিলনী এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে। কেন? কারণ, অনুব্রত-কাজ-শতাব্দী সব এক মঞ্চে। আর ভরা সভায় দাঁড়িয়ে মোটের উপর প্রত্যেকের একটাই বার্তা,একসঙ্গে চলতে হবে। দল না থাকলে কেউ কিছু নয়। তবে কি নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে ব্যস্ত নেতা-নেত্রীরা? এই প্রশ্নই যখন উঠছিল, সেই সময় আবার ‘বীরভূমের বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন, “তৃণমূলের শত্রু সিপিএম, বিজেপি,কংগ্রেস নয়। তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল।”
একসময় ভোট এলে ‘খেলা’ দেখাতেন কেষ্ট। বিরোধীদের দেদার আক্রমণ শানাতেন। বাদ যেত না পুলিশ প্রশাসনের একাংশ। কখনও ‘চড়াম-চড়াম’ ঢাক বাজানোর কথা বলতেন, কখনও বা ‘গুড় বাতাসার’দাওয়াই দিতেন। সেই অনুব্রতই যখন বলেন, তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল। সেই নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা যে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আজ অর্থাৎ শনিবার বীরভূমের সিউড়িতে রবীন্দ্র সদনে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল,চন্দ্রনাথ সিনহা,বিকাশ রায়চৌধুরী,মলয় মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা।
সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের শত্রু বিজেপি নয়। আমাদের শত্রু আমাদের দলের নেতারা। একটা পড়াতে দুটো নেতা হলে যা হয়। এ বলছে আমি বড়, ও বলছে আমি বড়। এই করতে করতে দলটাকে শেষ করে দিচ্ছো। কালীদাসের মতো আচরণ করছে। যেই দলে খাচ্ছ, সেটাকেই নষ্ট করে দিচ্ছ। আমাদের শত্রু বিজেপি নয়, আমাদের শত্রু আমাদের ঘরেই রয়েছে।”
সাংবাদিক সম্মেলনে অনুব্রত মণ্ডলকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “মলয় মুখোপাধ্যায় দামী কথা বলেছে। যেটা ন্যায্য, সেই কথা বলেছে। তৃণমূলের শত্রু বিজেপি নয় তৃণমূলের শত্রু কংগ্রেস নয় তৃণমূলের শত্রু সিপিএম নয় তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল। এটা অন্যায় বলেনি। এখানে এক কথা বলছে, বাইরে গিয়ে এক কথা বলছে। তিনটে ছাগল থাকলে খুব মারামারি করে। তিন নম্বর ছাগলের বাচ্চাটা খুব লাফায়। বাকি অন্য দুটো বাচ্চা ব্যাপক দৌড়াতে পারে।”
তা এই ছাগলের তিন নম্বর ছানাটি কে? মলয়-অনুব্রত মণ্ডলরা কাকে ইঙ্গিত করলেন? বলা বাহুল্য, সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বরাবরই কেষ্ট ছিলেন ভরসাযোগ্য পাত্র। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত জেলে গেলেও মমতার ভরসা ছিল সেই কেষ্টর উপরেই। তবে অনুব্রতর তিহাড় পর্বে রাঙা মাটির জেলায় বাড়ে কাজল শেখের দাপট। তবে কেষ্ট ফিরতেই আবার প্রকাশ্যে আসে দুই নেতার গোষ্ঠী কোন্দল। ফলত, কাকে ইঙ্গিত করে এই কথা বললেন কেষ্ট তা তিনিই জানেন।
