নলহাটি: মৌ চাকে ঢিল, আক্রান্ত TV9 বাংলা। টিভি নাইন বাংলার দুই প্রতিনিধির ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর করে বিভাস অধিকারীর দুই ছেলে সায়ন ও অর্ঘ্য। মারধরের মূল পাণ্ডা অর্ঘ্য অধিকারী। অর্ঘ্যর দাদা সায়নও মারধর ও ক্যামেরা ভাঙায় অভিযুক্ত। সায়নই টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরা ভাঙতে গিয়ে নিজের হাত কেটেছে। সেই হাত কাটার জন্য আমাদের প্রতিনিধিদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে। এখনও অধরা দুই হামলাকারি। অর্ঘ্য, সায়নের মাথায় কার হাত? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। TV9 নাইন বাংলার প্রতিনিধিদের ওপর হামলাকারী অর্ঘ্য অধিকারী কে? সূত্রের খবর, অর্ঘ্য এলাকারই বেসরকারি সংস্থার ডিরেক্টর। প্রভাবশালী শাসক নেতাদের সঙ্গে অর্ঘ্যর ওঠাবসা রয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, একাধিক অসামাজিক কাজে যুক্ত রয়েছেন অর্ঘ্য।
বিভাস অধিকারীর দুই ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। জোর করে আটকে রাখা, মারধর, সম্পত্তি নষ্ট, হুমকি, একই উদ্দেশ্য নিয়ে অপরাধ করার অভিযোগে এফআইআর। তবে পুলিশ যে এফআইআর লিখেছে, তার সব ধারা জামিনযোগ্য।
বিভাসের ইতিবৃত্ত ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, আগে বামপন্থী ছিলেন তিনি। বিভাসের বাবা ছিলেন সিপিএমের অঞ্চল প্রধান। পরে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা। ২০০৭ সাল থেকে চিটফান্ডের কারবার ফুলেফেঁপে ওঠে বিভাসের। ২০০৮ সালে এলাকায় তৈরি করে ডিএলএড কলেজ। এরইমাঝে বাংলাদেশের হিমায়েতপুর গ্রামের অনুকুল ঠাকুরের বাড়ির আদলে তৈরি করেন আশ্রম। এই সংগঠনকে নিয়ে খবর করতে গিয়েই আক্রান্ত হতে হয় TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে। বিভাস নলহাটির ২ নম্বর ব্লক সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি তিনি সেই পদ ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে চিঠি দেন। কিন্তু সেই চিঠি গৃহীত হয়নি। তিনি আবার অনুব্রত মণ্ডলেরও ঘনিষ্ঠ। তাঁর পারিবারিক অনুষ্ঠানে অনুব্রত মণ্ডল-সহ জেলার শীর্ষ নেতাকে দেখা গিয়েছে। এদিকে, আবার কৈলাস বিজয়বর্গীয় ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানেও অর্ঘ্যকে দেখা যায়। বিজেপির শীর্ষস্তরের নেতাদের সঙ্গে তাঁর ছবিও রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, দুর্নীতিতে বিভাসের হাত তাপস মণ্ডলের থেকেও অনেকটা লম্বা।
আপাতত ইডি-র নজরে বিভাস। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয় তাঁকে। এর আগেও তাঁকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়ান। ইতিমধ্যেই তাঁর আমহার্স্ট স্ট্রিটের অফিস সিল করে দিয়েছে ইডি।