বীরভূম: এখনও পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এবার বগটুই কাণ্ডে প্রথম গ্রেফতারি সিবিআই-এর। মুম্বই থেকে চার জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তদন্তের শুরুতেই সিটের কাছ থেকে যে এফআইআর কপি নিয়েছিল সিবিআই, তাতে নাম ছিল ধৃত সাবু শেখ ও বাপ্পা শেখের। বাকি দুজনের নাম উঠে আসে অভিযুক্তদের জেরায়। এরপরই শুরু হয় ‘ছানবিন’। টাওয়ার লোকেট করে চার জনের খোঁজ মেলে মুম্বইতে। সেখানেই একটা টিম গোপনে পাঠিয়ে দেয় সিবিআই। প্রথমে শণাক্তকরণ, তারপর বেশ কয়েকদিন ধরে নজরদারি। সবটাই চলেছে গোপনে। অভিযুক্তদের আঁচ পর্যন্ত পেতে দেননি তদন্তকারীরা। শেষমেশ গ্রেফতারি। ২১ মার্চ রাতে গণহত্যার পরই ট্রেনে চেপে রামপুরহাট থেকে পালিয়েছিল ধৃতরা। স্টেশনের সিসিটিভিতে বন্দি সেই প্রমাণ। তা হাতে আসে তদন্তকারীদের। বাকি অভিযুক্তদের থেকে পাওয়া তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজ, ফোনের টাওয়ার লোকেশন- তিনটে অস্ত্রে প্রথম চালটা চালে সিবিআই। সব থেকে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়, ‘গণহত্যার’ স্মৃতি মুছে ফেলতে মুম্বইতে আবার নতুন করে কাজের খোঁজ শুরু করেছিল চার জন। বিভিন্ন জায়গায় কাজও খুঁজেছিল। মিলছিল না। স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত হতে চাইছিল তারা।
কীভাবে উঠে আসে চার জনের নাম?
সিবিআই এই ঘটনার তদন্তভার নেওয়ার পর এটাই প্রথম গ্রেফতারি। এক্ষেত্রে সিবিআই সাহায্য নিয়েছেন তিন টেকনিক্যাল এক্সপার্টের। অভিযুক্ত ও সন্দেহভাজনদের কল লিস্টেও নজর রাখা হয়েছিল। তবে সিবিআই-এর গ্রেফতারির তালিকা আরও লম্বা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বগটুইকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
সিবিআই-এর গ্রেফতারি-স্ট্র্যাটেজি
সিবিআই জানতে পেরেছে, ২১ মার্চ রাতে রামপুরহাটে গণহত্যার পরই তারা সোজা চলে যায় মুম্বইতে। সেখানে পরিচয় গোপন করে ঘর ভাড়া করে থাকতে শুরু করেছিল তারা। অন্য কাজ খুঁজছিল। তাদের সেই জীবনযাত্রায় কোনও অস্বাভাবিকত্ব ছিল না। কিন্তু তারা টেরই পায়নি সেখানেও সিবিআই লেগে গিয়েছে তাদের পিছনে। এফআইআর-এ নাম থাকা দুজন বাকি দুজনকে সঙ্গে নিয়ে পালিয়েছিল। সিআইডি-র জালে ধৃত ২২ জনকে টানা জেরা, টাওয়ার ডাম্পিং করে বাকি চার জনের খোঁজ পায় সিবিআই।
জেরায় জানা গিয়েছে, ওই রাতে ঘটনাস্থলে ছিল চার জন। তারা নেতৃত্ব দিয়েছিল। তারপর তারা রামপুরহাট স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠে। মুম্বই পাড়ি দেয়। এক্ষেত্রে রামপুরহাট স্টেশনেরও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে সিবিআই। মুম্বইতে একটি টিম তৈরি করে সিবিআই। তারা চার জনকে শণাক্ত করে নজর রাখছিল। চার জনের ওপর টেকনিক্যাল সার্ভিলেন্স চালানো হচ্ছিল। নজর রেখেই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্তদের পলিগ্রাফি টেস্টের আবেদন
অভিযুক্তদের পলিগ্রাফি টেস্ট করাতে তৎপর সিবিআই। তদন্তে অগ্রগতির জন্য মূল অভিযুক্ত আনারুল হোসেন-সহ ৮ জনের পলিগ্রাফি টেস্ট করানোর আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। আপাতত সেই আবেদনের শুনানিতে স্থগিতাদেশ রয়েছে। তবে আদালতে এর পক্ষে সওয়াল করবেন সিবিআই-এর আইনজীবী।