রামপুরহাট: বগটুই গণহত্যা কাণ্ডের সঙ্গে আনারুল হোসেনের পাশাপাশি নাম জড়িয়েছিল আরও ১২ জনের। এতদিন পর্যন্ত জেল হেফাজতেই ছিলেন তাঁরা। তবে এই ১২ জনের বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ দিতে পারল না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। ফলে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করার নির্দেশ দিলেন বিচারক। শুধু তাই নয়, ভাদু শেখ খুনের ঘটনাতেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দিতে না পারায় ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করল রামপুরহাট মহকুমা আদালত।
মঙ্গলবার অভিযুক্ত বারো জনের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। আদালত সূত্র খবর, এই অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর করেন রামপুরহাট মহকুমা আদালতের বিচারপতি।
বগটুই গণহত্যা কাণ্ডে ৩০ জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সেই ঘটনায় সোমবার রামপুরহাট মহকুমা আদালতে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিলেও ১২ জনের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। অন্যদিকে, ভাদু শেখ খুনের ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিলেও বাকি ধৃতদের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিটই জমা দেয়নি সিবিআই । ফলে এই মামলাতেও ৯ জনকে নট সেন্ট আপ-এর রায় দিয়েছেন বিচারক। ফলত, ভাদু সেখ খুনের মামলায় জেল হেফাজতে থাকা ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
এই বিষয়ে সরকারি আইনজীবী জানান, ‘গতকাল সিবিআই বগটুই এর দু’টি কেসে চার্জশিট জমা করেছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বারো জনকে নট সেন্ট আপ করা হয়েছিল। অর্থাৎ তাঁদের নামে এখনও কোনও প্রমাণ মেলেনি। পাশাপাশি ভাদু শেখ খুনের মামলায় ৯ জনের নামে নট সেন্ট আপ করা হয়েছিল। এর অর্থ হল আজকে পর্যন্ত ওই নজনের নামে কোনও প্রমাণ মেলেনি। আপাতত তাদের জামিন মঞ্জুর করা হল। পরে যদি প্রমাণ মেলে তাহলে ফের তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, বগটুই কাণ্ডে ৯০ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। রামপুরহাট আদালতে মুখবন্ধ খামে চার্জশিট জমা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে, বগটুই গ্রামে যখন বাড়িতে আগুন লাগানো হচ্ছিল, তখন সোনা শেখের বাড়ি থেকে ফোন করে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ আসেনি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। সোমবার চার্জশিটে এই তথ্য উল্লেখ করেছে সিবিআই।
অপরদিকে, রামপুরহাটের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনের ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে রামপুরহাট আদালত। অভিযুক্তদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের দিকে এগোচ্ছেন তদন্তকারীরা। ৪ অভিযুক্তরা হলেন, পলাশ খান, নিউটন, মাসাদ শেখ, মহি শেখ। এই চার জনের নাম এফআইআর-এ আছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে ওই চার জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই রামপুরহাট আদালত চত্বর-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।