বোলপুর: অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) জমি সংক্রান্ত বিতর্কের আবহেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বোলপুরের বাড়ি প্রতীচীতে হাজির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর হাতে জমি সংক্রান্ত নথি তুলে দেন মমতা। পরে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরকারি নথি দেখিয়ে বললেন, জমি বিতর্ক নিয়ে যেটি অমর্ত্য সেন বলছেন, সেটিই ঠিক। অর্থাৎ, ওই বিতর্কিত ১৩ ডেসিমেল জমি যে অমর্ত্য সেন দখল করে রাখেনি, সেটাই বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি অমর্ত্য সেনের মতো নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে অপমান করা নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে গেলেন, ‘আগামী দিনে যাতে তাঁকে অসম্মানিত করার চেষ্টা বিজেপি বা বিজেপির নামাঙ্কিত কিছু গৈরিকধারী মানুষ না করে, আমি সেই কথা বলতে এসেছি।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আক্ষেপের কথা শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। জানালেন, তিনি শুধু চান বিশ্বভারতী যাতে ভালভাবে চলে। কথায় কথায় যাতে ছাত্রছাত্রীদের সাসপেন্ড করা, শোকজ় করা, হুমকি দেওয়া বন্ধ হয়, সেই কথাও বলেন তিনি। বললেন, ‘এখানে শুধু গৈরিকীকরণের প্যারেড না করে বিশ্বভারতী ভালভাবে চলুক, এটাই চাই। এরা বড় বড় কথা বলেছিল, তাই আমি ছোট্ট একটা ছক্কা মেরে গেলাম।’
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করছে, এমনও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার দাবি, বিশ্বভারতীতে অনেক সময়েই স্থানীয় পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এমনকী জেলাশাসককেও ডাকা হয় না। বললেন, ‘এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে যেন একটি আলাদা সীমানা তৈরি করা হয়েছে, যার সঙ্গে বাংলার কোনও সম্পর্ক নেই।’ বিশ্বভারতীর এমন পরিস্থিতি দেখে বেশ বিস্মিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘এমন বিশ্বভারতীর কথাই কি রবীন্দ্রনাথ চিন্তা করেছিলেন? তিনি চিন্তা করেছিলেন মুক্ত পৃথিবী, মুক্ত শিক্ষা।’
এদিকে অমর্ত্য সেনের নোবেলজয় নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। উপাচার্যের দাবি, অমর্ত্য সেন নাকি নোবেলজয়ী নন। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘উনি কি নোবেলদাতা হয়ে গিয়েছেন নাকি?’