খয়রাশোল: বীরভূমের ‘বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডল এখন গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিহাড়ে রয়েছেন। দলের দক্ষ সংগঠক কেষ্ট পঞ্চায়েতের আগে জেলায় না থাকায়, সংগঠন কীভাবে চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল বিভিন্ন মহলে। এমন অবস্থায় অনুব্রত-হীন বীরভূমের (Birbhum) দায়িত্ব নিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জেলার সংগঠন দেখভালের জন্য একটি কোর কমিটিও (TMC Core Committee) গঠন করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরও কি সামাল দেওয়া যাচ্ছে সংগঠনকে? প্রশ্ন উঠছে, কারণ বুধবার বীরভূমের খয়রাশোলে তৃণমূল অফিসে একটি বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল। বীরভূম জেলায় তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ এই বৈঠক ডেকেছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। বৈঠকে ছিলেন বীরভূমে তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন চক্রবর্তীও। কিন্তু দেখা মিলল না ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারীর। শুধু তাই নয়, ব্লক কমিটির একাধিক সদস্যেরও দেখা মিলল না সেখানে।
উল্লেখ্য খয়রাশোলে ১৫ জন সদস্যকে নিয়ে গঠিত হয়েছে তৃণমূলের ব্লক কমিটি। আগের ব্লক সভাপতি মারা যাওয়ার পর বর্তমানে সেখানে নামমাত্র ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী। এদিন সেই ব্লক সভাপতি সহ সাতজন ব্লক কমিটি সদস্য বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ। বললেন, ‘আমি ও নরেনদা এসেছিলাম। বুথ স্তরের লোকেরা ছিলেন। অঞ্চল সভাপতি, মহিলা সভানেত্রীরা ছিলেন। ছাত্র-যুবরাও ছিলেন। ওরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, ইফতার করলাম।’
পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন চক্রবর্তীকে অবশ্য এই ব্লক কমিটির সদস্যদের দেখা না পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলছেন, ‘অন্ধকার হলেই ছায়া পাওয়া যায়। একদিকে আবার আলোও উঠতে শুরু করেছে। একদিন সব ছায়া সরে গিয়ে খয়রাশোল হাসবে, নিশ্চিন্ত থাকুন।’
যদি কেন এদিন বৈঠকে উপস্থিত থাকেননি, সেই বিষয়ে এলাকার ব্লক সভাপতির কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কাঞ্চন অধিকারী ঘনিষ্ঠ খয়রাশোল ব্লক কমিটির সদস্য রজত মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘আমাদের যখন কোনও বৈঠক হয়, তখন আমাদের কাছে মেসেজ আসে। কিন্তু আমরা এই মিটিং-এর কোনও মেসেজ পাইনি। কোনও ফোন বা চিঠিও পাইনি। তাই আমরা যাইনি। আমার দাদা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে মারা গিয়েছিলেন। আরও দুই ব্লক সভাপতি মারা গিয়েছেন। আমরা চাই না তার পুনরাবৃত্তি হোক। যারা গত বিধানসভায় বিজেপিকে মদত দিয়েছিল, তারই এখন দলের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।’ আগামী দিনে খয়রাশোল যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে সেই অনুরোধ তিনি করেছেন জেলা কমিটির কাছে। বলছেন, ‘দলের আমি-আমরা লড়াই যেন বন্ধ হয়, সেই আবেদন করছি। এরকম যদি খয়রাশোলে চলতে থাকে, তাহলে আগামী দিনে দল করব কি না, ভাবতে হবে।’