কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কলমের আঁচড়ে চাকরি গিয়েছে প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। অন্যদিকে চাকরি পেয়েছেন অনেকে। একসময় পথে বসে আন্দোলন করা ববিতা সরকার, প্রিয়াঙ্কা সাউরা তাঁরই নির্দেশে আজ স্কুলের দিদিমনি। এই সব মামলা প্রসঙ্গে অনেকেরই মনে আছে সোমা দাসের কথা। ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা পথে বসে আন্দোলন করছিলেন জেনে বিচলিত হয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন এজলাসে। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পরে নবান্নের নির্দেশে চাকরি পেয়েছিলেন সোমা। স্বপ্নপূরণ হয়েছিল নলহাটির সোমার। আজ সেই সোমা বলছেন, ‘ওঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করতে চাই না। শুধু প্রণাম জানাতে চাই। উনি জনগণের বিচারপতি।’
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে সরছে নিয়োগ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা। সোমা বলেন, মামলা থেকে সরানোর খবর পেয়ে দুপুরে খুব মর্মাহত হয়েছিলাম। পরে সন্ধ্য়ায় স্বস্তি পেয়েছি এটা জেনে যে সবকটি মামলা থেকে সরানো হচ্ছে না তাঁকে। দুর্নীতির মামলাগুলোতেও ওঁর রায় বহাল আছে। দ্রুত যোগ্যদের উপযুক্ত জায়গা দেবেন উনি, আর শাস্তি দেবেন দুর্নীতিবাজদের।
তিনি এদিন উল্লেখ করেন, কীভাবে তাঁর অসুস্থতার কথা জেনে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি। সোমা বলেন, ‘আমি চাকরি পাওয়ার পর অনেকেই আশা দেখেছিলেন। আমার সহযোদ্ধারা ভেবেছিলেন এবার হয়ত যোগ্যরা চাকরি পাবে। উনি না থাকলে এই জায়গায় দাঁড়াতে পারতাম না। উনি জনগণের বিচারপতি। উনি মানুষের কথা ভেবেছেন।’
মারণ রোগ নিয়েই হকের চাকরি পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করেছেন সোমা। চিকিৎসার জন্য খরচ জোগাতে সমস্যায় পড়তে হয়। এজলাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সব শুনে সেদিন বলেছিলেন, তাঁর হয়ে সরকারের কাছে চাকরির সুপারিশ করবেন। শিক্ষকতা না হলে অন্য দফতরে কোন চাকরির জন্যও বলবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভরা এজলাসে দাঁড়িয়েই সোমা বলেছিলেন, তাঁর স্বপ্ন শিক্ষকতা করা। তিনি সেটাই করবেন, অন্য চাকরি নয়। পরে নবান্নের নির্দেশে চাকরি পান তিনি।