বোলপুর: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত ফলক এবার বাতিল করার নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রকের। এই মর্মে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। বিশ্বভারতীর ওই ফলকে কেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই, সেই নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে। এদিকে এই বিতর্কের আবহেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসেবে মেয়াদ ফুরিয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন সঞ্জয়কুমার মল্লিক। নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরই বিশ্বভারতীর সমস্যা কাটাতে শিক্ষামন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। আর এরই মধ্যে বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্কে পদক্ষেপ করল শিক্ষামন্ত্রক। ওই ফলক পরিবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রকের তরফে।
সূত্রের খবর শিক্ষামন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাট স্থির করে দেওয়া হবে এবং সেই ফরম্যাটেই নতুন ফলক তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আট জনের একটি কমিটি গঠন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রকের তরফে। সেই কমিটিতে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার জন বিভাগীয় প্রধান ও দু’জন এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল সদস্য। এই কমিটির মাধ্যমে স্থির হবে ফলকে কী লেখা হবে। পাশাপাশি ফলকে যে লেখা থাকবে, সেটি বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি… তিন ভাষাতেই লেখা থাকতে হবে। সূত্রের খবর, পরিবর্তিত ফলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বা উপাচার্যের নাম না রাখারও প্রস্তাব দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রক।
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতী ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পাওয়ার পর বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য একটি ফলক লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই ফলক ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। ফলকে আচার্য ও উপাচার্যের নাম থাকলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ছিল না। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূল লাগাতার প্রতিবাদ চালিয়ে গিয়েছিল। ধরনা-মঞ্চ তৈরি হয়েছিল শান্তিনিকেতনে। সেই ধরনা-মঞ্চের সামনে দেখা গিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরাও। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্যের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন অনুুপমও।
আজ শিক্ষামন্ত্রকের এই নির্দেশের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় অনুপম আজ ফের একবার বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে তুলোধনা করেন। বললেন, “বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী নিজের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ফলক তৈরি করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন নিজের মেয়াদকাল বাড়াতে। এই ফলক তৈরির সময় প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে অনুমতিও নেননি তিনি। শিক্ষা মন্ত্রকের হস্তক্ষেপের ফলে সেই ফলক বিতর্কের অবসান হল বলা চলে।”