বীরভূম: ফের বিতর্কে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। বিজেপির শহিদ সম্মান যাত্রা কর্মসূচির অংশ হয়ে উঠে বিতর্কে জড়াল গুরুদেবের শিক্ষাঙ্গন (Visva Bharati University)। ফের বিতর্কের কেন্দ্রে উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তী। বুধবার, বিশ্ববিদ্য়ালয়ে আসেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। মূলত,দলীয় একটি কর্মসূচির অনুষ্ঠান কোনও বিশ্ববিদ্য়ালয়ের অভ্যন্তরে কেন হবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বুধবার, বিশ্বভারতী (Visva Bharati University) কর্তৃপক্ষের তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে সম্মান জানাতে একটি সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রায় ঘণ্টাতিনেক সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্য়াপকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি পালন এর আগে দেখা যায়নি। গুরুদেবের শিক্ষাঙ্গনে এ ধরনের কর্মসূচি পালনের নেপথ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্য়ুত্ চক্রবর্তীরই ‘স্বৈরাচারিতা’ বিদ্যমান বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মহলের।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছে বিশ্বভারতী। বিজেপি কেন একুশের নির্বাচনে জয় পায়নি সে প্রসঙ্গে আলোচনা চক্র বসিয়ে আগেও বিতর্কের কেন্দ্রে জড়িয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ বার সরাসরি বিজেপির দলীয় কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় বিশ্বভারতীর অন্দরে। প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ও আশ্রমিকরাও। শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীর ‘বিশেষ দলীয়প্রীতি’র জেরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এ হেন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। যদিও এ বিতর্কে বরাবরের মতোই প্রতিক্রিয়াহীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালেই বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ না করার অভিযোগ করা হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। এমনকী, খোদ মুখ্য়মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমে স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পরবর্তীতে বিশ্বভারতীতে বসন্ত উত্সব পালন থেকে শুরু করে রাস্তা মেরামত, এরকম একাধিক বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কের শিরোনামে ছিলেন উপাচার্য। সম্প্রতি, একাধিক অধ্যাপককে শো-কজ নোটিস দেওয়া, পড়ুয়াদের সাসপেন্ড করা-সহ নানা ইস্যুতে আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছে বিশ্বভারতী। কিছুদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত সদস্য। তাঁর অভিযোগ উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তী বৈঠকের নামে নিজের স্বৈরতন্ত্র চালান। কারোর কোনও পরামর্শই গ্রহণ করেন না। তাই, বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন ওই সদস্য।
আরও পড়ুন: পত্রাঘাতের জের! ইউজিসির চিঠিতেই তড়িঘড়ি বিতর্কে রাশ টানতে উদ্যোগী বিশ্বভারতী