বীরভূম: ফের আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে অমান্য করে আবারও সেন্ট্রাল অফিসের গেটে ঝুলল তালা। সমস্যায় আমজনতা।
সম্প্রতি ছাত্রবিক্ষোভের জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)। সেই বিতর্কের রেশ গড়ায় আদালত পর্যন্ত। আদালতের নির্দেশে যেমন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়, তেমনই বিশ্বিবদ্যালয়ের সমস্ত গেট খোলা রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্যই মূলত এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, মঙ্গলবার সকালে কার্যত উল্টে যায় ছবিটা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয় সেন্ট্রাল অফিসের গেট। ফলে, ১০ মিনিটের রাস্তা ঘুরপথে যেতে প্রায় ১ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে পথচারীদের এমনটাই অভিযোগ।
সেন্ট্রাল অফিসের এই রাস্তাটি শান্তিনিকেতন থানা পর্যন্ত সংযোগকারী রাস্তা। আগেও এই রাস্তার প্রবেশদ্বার খোলা-বন্ধ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে বিশ্বভারতী। গত বছর, বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দিয়ে ঘেরাও করাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। ভেঙে দেওয়া হয়েছিল সেই পাঁচিলও। বিক্ষোভের অনতিপরেই আদালতের নির্দেশে গড়ে ওঠে একটি কমিটি। সেই কমিটির নির্দেশেই নিরপত্তার খাতিরে ‘বলাকা’ ও ‘পূরবী’-তে দুটি গেট তৈরি করা হয়। বলা হয়েছিল গেট দুটি সাধারণ মানুষের জন্য খোলা রাখতে হবে। কারণ, ওই রাস্তাটি বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিস ( Visva Bharati Central office) থেকে শুরু করে শান্তিনিকতন (shantiniketan) থানা হয়ে বোলপুর মেইন রোড পর্যন্ত গিয়েছে।
এত দিন বলাকা ও পূরবীর দুটি মূল ফটক বন্ধ থাকলেও সেই সংলগ্ন রাস্তা দুটি খোলা ছিল। যেখান থেকে সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে, বাইক বা সাইকেল নিয়ে যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু, মঙ্গলবার সকাল থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই দুটি রাস্তা। ফলে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। একমাত্র পড়ুয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী ছাড়া আর কেউই ওই রাস্তা ব্যবহার করতে পারছেন না। বোলপুরের মেইন রোড যেতে গেলে স্থানীয়দের প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা অতিরিক্ত ঘুরতে হচ্ছে। অভিযোগ, সোমবার উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তী পুনরায় কাজে যোগদানের পরেই রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। যারপরনাই এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীও। এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি, ছাত্র আন্দোলনের জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী চত্বর। উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীকে টানা ছয় দিন ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। কার্যত অচলবস্থা জারি হয় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। বিক্ষোভের জের আদালত পর্যন্ত পৌঁছলে, বিচারপতি রাজশেখর মান্থা স্পষ্টই বলেন, “উপাচার্য আইনের ঊর্ধ্বে নন।” সেইসঙ্গে বহিষ্কৃত তিন পড়ুয়াকে অবিলম্বে ক্লাসে ফেরানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই নির্দেশানুসারে, শুক্রবার রাতেই ৩ বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের ক্লাসে যোগ দিতে দেওয়ার জন্য় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়ে অধ্য়ক্ষ ও বিভাগীয় প্রধানদের চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) প্রোক্টর শঙ্কর মজুমদার। কিন্তু, অভিযোগ, সোমবারের পর গোটা একদিন কেটে গেলেও ক্লাসে যোগ দিতে পারছেন না তিন বহিষ্কৃত পডুয়া। এই মর্মে, মঙ্গলবারই আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন বহিষ্কৃত ছাত্র সোমনাথ সৌ।
আরও পড়ুন: Arjun Singh: সাংসদের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে উদ্ধার ৩টি তাজা বোমা! অনুসন্ধানে পুলিশ কুকুর