বোলপুর: এই নিয়ে চারবার বন্ধ থাকছে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা (Poush Mela)। গত বছর করোনার কারণে বন্ধ ছিল মেলা, এবারও মেলা বন্ধের জন্য করোনার নয়া স্ট্রেইন ওমিক্রনকে তুলে ধরা হয়েছে। যদিও বিতর্কের মুখে পড়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আর সেই বিতর্ক আরও উস্কে দিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakraborty)।
এবার পৌষ মেলার না করতে পারার জন্য রাজ্য সরকারের উপর এই দায় চাপালেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। তাঁর দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে মেলা নিয়ে চিঠি লেখার পরেও সরকারের তরফে কোনও উত্তর মেলেনি। তাই পৌষ মেলা করা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বভারতীর তরফ থেকে পৌষ মেলা না করা হলেও পৌষ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সকালে ছাতিমতলাই উপাসনার মাধ্যমে পৌষ উৎসবের সূচনা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। উ ৎসবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিদ্যুৎ বাবু বলেন, “আমরা পৌষ মেলা করার জন্য অক্টোবর মাস থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেই মতই অনুমতি নেওয়ার জন্য আমরা প্রথমে কেন্দ্র কে চিঠি পাঠাই। কিন্তু কেন্দ্র জানায় রাজ্যকে চিঠি দিয়ে এ সম্পর্কে জেনে নিতে। এর পরেই রাজ্য স্বাস্থ্য সচিবকে আমরা চিঠি পাঠাই। এমনকী এর পরে তিনবার রিমাইন্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। এর পরেই প্রায় শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নিই পৌষ মেলা করা সম্ভব নয়”।
করোনা পরিস্থিতির জন্য গত বছর বন্ধ ছিল পৌষ মেলা। এ বছরও সেই সিদ্ধান্তে অনড় ছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে এতদিন কেন মেলা বন্ধ, তার কোনও কারণ দর্শানো হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার উপাচার্যের দাবিতে শুরু হল নয়া বিতর্ক। গত কয়েক বছরে মেলা থেকে পাঁচিল, একাধিক বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাতে গিয়েছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবার বিদ্য়ুৎবাবুর দাবিতে আবারও এক বিতর্কের আভাস পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। এখন রাজ্যের তরফে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া আসে সেটাই দেখার।
অন্যদিকে এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে ছাতিমতলার ঐতিহ্যবাহী মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের নিউ এডুকেশন পলিসির গুণগান করতে শোনা যায় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই প্রশ্ন তুলে বলছেন, ঐতিহ্যবাহী ছাতিমতলার মঞ্চকে উপাচার্য আদতে কেন্দ্রীয় সরকারের বন্দনায় ব্যবহার করছেন, যা অবশ্যই ‘অপরাধের’।
শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা বন্ধ হওয়ায় মন খারাপ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তাঁদের বিক্রিবাটার অন্যতম সময় পৌষ মেলা। তবে শান্তিনিকেতনে পৌষ মেলা না হওয়ায় একটি বিকল্প মেলার আয়োজন হয়েছে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে। এই বছর মেলা না হওয়ায় পরপর দু’বছর বন্ধ থাকল শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা। তবে এর আগেও মোট দু’বার বন্ধ রাখতে হয়েছিল এই ঐতিহ্যবাহী মেলাকে। সেই হিসাবে পৌষ মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত চারবার বন্ধ হল।
আরও পড়ুন: Sayantan Basu: রাজ্য কমিটি থেকে নাম বাদ, তালিকা গ্রুপে ঢুকতেই ‘লেফট’ হয়ে গেলেন সায়ন্তন বসু