কোচবিহার: আজ, শুক্রবার কোচবিহারের তিনবিঘাতে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । বৈঠক করবেন বিএসএফ-এর উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে। মূলত তিন বিঘা করিডর নিয়ে আলোচনা করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে তিনবিঘাতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসা এবং বিএসএফ-এর সঙ্গে বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ । দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে তৎপর সরকার। বৃহস্পতিবারই শিলিগুড়ির কাছে চিকেন নেক, তারপর শুক্রবার তিনবিঘা করিডরে অমিত শাহ’র বৈঠক এক নতুন বার্তাবহক।
১৯৯২ সালে বাংলাদেশের দুই জায়গা দহগ্রাম ও আঙ্গরাপোতার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্যে ভারতের তিনবিঘাতে একটি করিডর স্থাপন করা হয় । এই করিডর দিয়েই চলাচল করেন বাংলাদেশিরা । আগে ১২ ঘণ্টা এই করিডর খোলা থাকলেও, এখন ২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশিদের চলাচলের জন্যে খুলে দেওয়া হয়।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই এলাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটির ওপর বিশেষ নজর রয়েছে কেন্দ্রেরও। ১৯৭৪ সালের চুক্তি অনুসারে বেরুবাড়ি পায় ভারত। তার বিনিময়ে বাংলাদেশের দুটি ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গরাপোতার মানুষের যাতায়াতের জন্য তিন বিঘাকে ব্যবহার করে করিডর তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তিন বিঘা করিডর বাংলাদেশকে ইজারা দিয়েছিল ভারত। প্রায় ৬০০ ফুট বাই ৩০০ ফুট সেই করিডর তৈরিকে কেন্দ্র করেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল বিস্তর। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছিলেন এলাকার মানুষ। মৃত্যুও হয়েছিল কয়েকজনের। সেই সব এখন ইতিহাস।
এখানে আন্তর্জাতিক সীমান্ত খোলা। তাই এই এলাকায় আন্তর্জাতিক চোরাচালানের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান বন্ধ করতে তৎপর কেন্দ্র। এলাকার নজরদারি ও বিধিনিষেধের ওপর সেক্ষেত্রে জোর দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। তা নিয়েই মূলত বিএসএফের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা করতে পারেন শাহ।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শাহির তিন বিঘা সফরের পিছনে কাজ করছে ভোটের অঙ্কও। গত লোকসভা নির্বাচনে এখানে ভাল ফল করেছিল বিজেপি, তারপর বিধানসভা নির্বাচনে ফের মাথা তুলে দাঁড়া তৃণমূল। সেক্ষেত্রে শাহ এখানে ভোটের স্ট্র্য়াটেজিও নির্ধারণ করতে পারেন। দলের সঙ্গে এখানকার মানুষের সংযোগ বৃদ্ধির ওপরেও নজর দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে এক ঢিলে দু’পাখি মারতে চাইছেন শাহ।