কোচবিহার: উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর পর এবার দলের বিরুদ্ধে ফের বিস্ফোরক তৃণমূলের আরও নেতা তথা বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া। দলের একটি সংখ্যালঘু সম্মেলনে যোগ দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “মঞ্চে বসে থাকা নেতাদের জন্যই দলের দুরবস্থা। মঞ্চে বসা নেতারাই এলাকায় গিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন।” এখানেই শেষ নয়, এই রকম চলতে থাকলে ২০২৪ সালে আবারও বিজেপি জিতবে বলেও বক্তব্য রাখেন তৃণমূল বিধায়ক।
সোমবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে নাম না করে উদয়ন গুহকেও বিঁধেছেন জগদীশ। বলেন, “২০১৯ সালের নির্বাচনে যাঁরা মানুষের থেকে সরে গিয়েছিলেন তাঁদের থেকে মানুষও সরে গিয়েছিল।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জগদীশবাবুর এই বক্তব্য বুঝিয়ে দিচ্ছে তিনি মানুষের সঙ্গে ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনে ছিলেন বলেই একুশের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। অন্যদিকে একুশের বিধাসভা নির্বাচনে দিনহাটা সহ একাধিক কেন্দ্রে তৃণমূল পরাজিত হয়েছে। তাই তৃণমূল বিধায়কের ইঙ্গিত যে উদয়ন গুহদের দিকে তাও একপ্রকার স্পষ্ট বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এ দিন, দলের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের লোকেদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে তৃণমূলেরই লোক। বিজেপির কেউ ভাঙচুর বা লুটপাট করেননি। বিজেপির কেউ এই কাজ করেননি।” এরপর তিনি বলেন, “কোচবিহার জেলা তৃণমূল চলছে তামসা দেখার জন্যে। তামসা দেখার জন্যেই দলের বাতি নিভে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০২৪ সালে আবার বিজেপি জিতবে।”
এই বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, “তৃণমূলের মধ্যে বেশিরভাগ চোর এটা জগদীশবাবু হয়ত উপলব্ধি করতে পেরেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দলের মধ্যে দুটি ভাগ করে রেখেছেন। একটি তাঁর অপরটি ভাইপোর। তাই দেরিতে হলেও এটা জগদীশবাবু বুঝতে পেরেছেন।”
সম্প্রতি, কোচবিহারের দিনহাটার চৌধুরীহাটে সংখ্যালঘু কনভেনশন মঞ্চে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। দলেরই একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির নিচে সততার প্রতীক লেখাটি এখন দলের কিছু নেতা কর্মীদের আচরণের জন্য লিখতে পারছি না। এটা আমাদের কাছে দুঃখজনক। এর জন্য দায়ী দলের কিছু নেতা। যারা বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। এর জন্য দায়ী মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নন। যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন তাঁদেরই এই দায়ভার নিতে হবে।” এই ঘটনার পর অপর আর এক তৃণমূল নেতার এহেন মন্তব্যে ফের শোরগোল পড়ে গিয়েছে।