Paresh Adhikari: শুধু মেয়েই নয়, বাম আমল থেকে আরও ২৫ আত্মীয়কে সরকারি চাকরি দেওয়ার অভিযোগ পরেশের বিরুদ্ধে

TV9 Bangla Digital | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

May 26, 2022 | 6:53 PM

Paresh Adhikari: মেখলিগঞ্জে শোনা যায়, তাঁর বাড়ির পোষ্য কুকুর যদি ঠিকমতো পড়াশোনা করত তাহলে হয়ত কোনও পুলিশ অক্যাডেমিতে তাঁরও চাকরি হত।'

Paresh Adhikari: শুধু মেয়েই নয়, বাম আমল থেকে আরও ২৫ আত্মীয়কে সরকারি চাকরি দেওয়ার অভিযোগ পরেশের বিরুদ্ধে
পরেশ অধিকারী

Follow Us

কোচবিহার: একা কন্যায় রক্ষে নেই, ২৫ আত্মীয়ও দোসর! স্কুল সার্ভিস কমিশনে কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে অন্যায্যভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসার পর প্রাক্তন ফরোয়ার্ডব্লক নেতা তথা বর্তমান তৃণমূল সরকারের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ উঠে এল। তবে নব পর্যায়ের এই অভিযোগে যা বলা হচ্ছে তার সূত্রপাত বাম জমানায়। অভিযোগকারীদের দাবি, বাম আমল থেকে তৃণমূল আমল পর্যন্ত অন্ততপক্ষে ২৫ জন নিকট আত্মীয়ের সরকারি চাকরি হয়েছে পরেশ-পরশে।

অভিযোগ মালা!

তিনি পরেশ চন্দ্র অধিকারী। একসময় প্রাথমিক শিক্ষকতা করতেন। তাঁর স্ত্রী মীরা অধিকারীও সরকারি চাকরিজীবী। মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী পেশায় শিক্ষিকা। বর্তমানে যদিও, হাইকোর্টের নির্দেশে বরখাস্ত। ছেলে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পড়েছেন। বর্তমানে অস্থায়ী ভাবে চ্যাংড়াবান্ধা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চাকরি করছেন।

এতো গেল নিজের পরিবার। এবার নজর ঘোরানো যাক আত্মীয়দের মধ্যে। অভিযোগ, তাঁর আত্মীয়দের বেশীরভাগ চাকরিই বাম আমলে পরেশবাবু বিধায়ক ও মন্ত্রী থাকাকালীন হয়েছে। সূত্র বলছে, পরেশ চন্দ্র অধিকারীর তিন দাদা ও ভাই এর মধ্যে অখিল অধিকারী চাকরি করতেন। অবসর সময়ে ওকালতি করতেন। অখিলবাবুর স্ত্রী অর্থাৎ পরেশবাবুর বউদি খাদ্য দফতরে চাকরি করেন এবং তাঁদের মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিরতা। পরেশ অধিকারীর আর এক ভাই হরিশ অধিকারী। তাঁর চার ছেলে। চার জনের মধ্যে একজন কলেজের ক্লার্ক এবং বাকি তিনজন খাদ্য দফতরে চাকরি করেন।

এরপর আসা যাক মন্ত্রীমশাইয়ের বোনেদের দিকে। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দুই বোন মায়া ও ছবি অধিকারী। আর এক বোনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মায়া ও ছবি দেবী দু’জনই আইসিডিএস-এর সুপারভাইজার। মন্ত্রীর দুই ভাগ্না, এক ভাগ্নি!  তাঁদের মধ্যে এক ভাগ্না ও ভাগ্নি লতা অধিকারী মণ্ডল খাদ্য দফতরে চাকরি করেন আর একজন স্কুলের ক্লার্ক।

অন্যদিকে, পরেশের মামাতো ভাই নিরঞ্জন কৃষি দফতরে চাকরি করতেন। পিসতুতো ভাই ভবেশ্বর অধিকারী প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ভবেশ্বরের দুই মেয়ে স্কুলের শিক্ষিকা। পরেশের কয়েকজন নাতিও চাকরি করেন। কেউ খাদ্য দফতরে তো কেউ স্কুলে। পরেশের এক শ্যালক চিকিৎসক। সেই চিকিৎসকের স্ত্রী স্বাস্থ্য দফতরে এবং তাঁর শ্যালক ও শ্যালিকাও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। আর এক শ্যালক জগদ্বীশ রায়। তাঁর এক ছেলে এবং এক ছেলের বউ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। অন্য আর এক শ্যালক উদ্ধব রায় বিডিও অফিসের চাকরি করেন।

আশেকার রহমান, মেখলিগঞ্জের বিজেপি টাউন মণ্ডল সভাপতি বলেন, ‘আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ এর আগেও করেছিলাম। পরেশ চন্দ্র অধিকারী বাম আমল থেকে পরিবারকে বিভিন্ন রকম চাকরির সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছিলেন। শুধু সুযোগ-সুবিধাই নয়, তাঁর বিভিন্ন আত্মীয় স্বজন, দাদা-ভাই, ভাগ্নি-ভাগ্নে সর্বপরি মেখলিগঞ্জের বুকে প্রায় ২৫ জন আত্মীয় স্বজনকে তিনি বাম আমল থেকে তৃণমূল আমল পর্যন্ত চাকরিতে নিয়োগ করেছেন তাঁর প্রভাব খাটিয়ে।’ এরপর বিজেপি নেতা দাবি করেন, ‘যাঁরা ওঁর মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন সেই চাকরির পূর্ণঙ্গ তদন্ত হোক।মেয়ের মতো তাঁর আত্মীয়রাও  আগামী দিনে চাকরি থেকে বরখাস্ত হবে। মেখলিগঞ্জে তাঁর প্রভাবের জেরে এমন কথাও কানে উঠেছিল, তাঁর বাড়ির পোষ্য কুকুর যদি ঠিকমতো পড়াশোনা করত তাহলে হয়ত কোনও পুলিশ অক্যাডেমিতে তাঁরও চাকরি হত।’

এই বিষয়ে কোচবিহার তৃণমূল নেতা জেলা সভাপতি বলেন, ‘যোগ্যতা থাকলে একই পরিবারের অনেকেই চাকরি পেতে পারেন। বাকি বিষয় তদন্ত সাপেক্ষ।’

Next Article