কোচবিহার: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে হারিয়ে চর্চার আলোকবৃত্তে জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। ৩৯ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনই বসুনিয়া বলেছিলেন, ‘যো জিতা ওহি সিকন্দর।’ নিশীথকে হারিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই ‘সিকন্দর’। সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক পদে ছিলেন জগদীশ বসুনিয়া। এবার লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রার্থী করে চমকে দেন সকলকে। মঙ্গলবার ভোটের গণনা শেষে বসুনিয়াও কম চমক দিলেন না। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে হারিয়ে তাঁর জয় জয়কার।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে গত বছর রাজ্য রাজ্যনীতি যখন উত্তাল, সেই সময় পাল্টা শাসকরা বিঁধতে শুরু করে বামেদের। বাম আমলে চিরকুটে চাকরি হতো বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল। সে সময় জগদীশ বসুনিয়াও সরব হয়েছিল। তিনি যেহেতু বাম রাজনীতি থেকে আসা, তাঁর দাবি ছিল, ন’এর দশকে তিনি যখন বামফ্রন্ট করতেন, সেই সময় কীভাবে নেতাদের মধ্যে চাকরি ভাগাভাগি হতো তা তিনি নিজের চোখে দেখেছেন। তিনিও দাবি করেন, সে সময় চাকরি চিরকুটেই হতো। এ হেন বসুনিয়ার হাত ধরে এবার উত্তরবঙ্গে ঘাসফুল ফুটল।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার প্রাপ্ত ভোট ৭৮৮৩৭৫। বিজেপির প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক পেয়েছেন ৭৪৯১২৫ ভোট। অর্থাৎ ৩৯২৫০ ভোটে নিশীথকে হারিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী পান ১০৬৭৯ ভোট।
কোচবিহারকে এক সময় ফরওয়ার্ড ব্লকের গড় বলা হত। তিন দশকের বেশি সময় তা বামেদের হাতে ছিল। ফরওয়ার্ড ব্লক করতেন জগদীশ বর্মা বসুনিয়াও। বামনেতা হিসাবে দাপট কম ছিল না। তবে রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূলে যোগ দেন। ২০২১ সালে ১১৭৯০৮ ভোটে জেতেন।
নিশীথ প্রামাণিককে পরাস্ত করতে এবার সেই জগদীশ বসুনিয়াতেই ভরসা রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাপুটে এই নেতা কোচবিহার তুলে দিলেন দলনেত্রীকে। তাঁর হাত ধরেই উত্তরবঙ্গে শূন্যের গিটঁ কাটিয়ে খাতা খুলল তৃণমূল।