কোচবিহার: ভোট পরবর্তী হিংসায় (Post Poll Violence) তৃণমূল (TMC) কর্মী খুনের মামলায় কোচবিহারে সিবিআই (CBI)-এর হাতে গ্রেফতার চার সক্রিয় বিজেপি (Bengal BJP) কর্মী। রবিবার তাঁদের তুফানগঞ্জ আদালতে তোলা হলে সিবিআই রিমান্ড দাবি করে । তবে পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় তুফানগঞ্জের আদালত বিজেপি কর্মীকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত ঘোষণা করেন ।
গত ৪ ই মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন তৃণমূল কর্মী শাহিনুর রহমান। পরবর্তীতে ৫ই মে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ভুট্টা খেত থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। চিলাখানায় তৃণমূল কর্মী শাহিনুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে দু’দিন চিলাখানায় আসে সিবিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল।
এই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গোপালপুরে বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এর মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁরা হলেন ঈশ্বর দাস, মিহির চন্দ্র, গোবিন্দ দাস ও ঈশ্বর দাস। তাঁরা প্রত্যেকেই সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
তাঁদের তুফানগঞ্জ মহকুমা দায়রা আদালতে পেশ করা হয়। এই খুনের ঘটনায় যে ১৬ জনের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, তার মধ্যে গ্রেফতার হওয়া ঈশ্বর দাসের নাম ছিল না। ঈশ্বর দাসের স্ত্রী পিঙ্কি দাস বলেন, “শনিবার দুপুর বারোটায় আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই গোপালপুরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাত ন’টার সময়ে তাঁরা ফোন করে জানান যে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
এদিনের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি মালতি রাভা বলেন, “বিজেপির নেতা কর্মীদের অনেক ক্ষেত্রেই ফাঁসানো হয়। তবে সিবিআই নিরপেক্ষ তদন্ত করছে। নিশ্চয় ঠিকঠাক বিচার হবে। অনেক সময় গোষ্ঠীকোন্দলেই মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল কর্মীর। সেক্ষেত্রেও বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হয়েছে।”
বিজেপি নাটাবাড়ি বিধানসভার সংযোজক চিরঞ্জিত দাস বলেন, সিবিআই নিরপেক্ষভাবেই ঘটনার তদন্ত শুরু করছে। আগামী দিনে প্রকৃত দোষীরা ধরা পড়বে। ঘটনার প্রকৃত তথ্য উঠে আসবে।
চলতি মাসের ৭ তারিখেই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে কোচবিহারের মাথাভাঙা হাসপাতালে যান সিবিআই আধিকারিকরা। সূত্র মারফত জানা যায়, ভোট পরবর্তী পর্যায়ে মাথাভাঙাতে অনিল বর্মন নামে এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই বিজেপি কর্মীর দেহ জঙ্গলে একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়। ওই ব্যক্তির দেহ মাথাভাঙা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটির পিছনে আত্মহত্যার তত্ত্ব খাঁড়া করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবার প্রথম থেকেই খুনের অভিযোগ তুলে আসছিল। সেই ঘটনার তদন্তে এদিন মাথাভাঙা হাসপাতালে আসতে পারেন তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যেই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের তলব করতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, এবার ধাপে ধাপে প্রত্যেকটি কেসের তদন্তকারী রাজ্যের অফিসারদের তলব করা হবে।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় নতুন ৩টি মামলার মধ্যে ১টি নদিয়া জেলা ও ২টি উত্তর ২৪ পরগনার। রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: Gujarat CM Resigns: গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা বিজয় রূপাণীর
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘ওঁর কানে সারাজীবন হারের যন্ত্রণা বাজবে,’ ফের মমতাকে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর