কোচবিহার: পঞ্চায়েত ভোটে কেউ বিজেপির হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গেলে তাঁর পা ভেঙে দেওয়া হবে। প্রকাশ্য জনসভা থেকে এমনই হুমকি দিলেন সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। তৃণমূল বিধায়কের হুমকি, পঞ্চায়েত ভোটে ‘কেন্দ্রের বিএসএফ, মিলিটারি নয়, আমাদের মিলিটারি-বিএসএফ থাকবে’। কেউ কী ভাবে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান তা দেখে নেওয়া হবে।
শুক্রবার রাতে সিতাইয়ে দলীয় এক সভায় বক্তব্য রাখছিলেন জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। সেখানেই কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়েও সরব হন তিনি। কার্যত হুমকির সুরে বিজেপির নেতা কর্মীদের উদ্দেশে হুঙ্কার ছাড়েন শাসকদলের এই বিধায়ক।
জগদীশ বর্মা বসুনিয়া বলেন, “যার যার মনে আশা আছে ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেবেন, তারা কান খুলে শুনে নিন। বাপের দম থাকলে বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে যায় যেন। বিধানসভার ভোটেও মিলিটারির ভয়, বিএসএফের ভয় দেখিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে কোন মিলিটারি আসবে? তখন আমাদের মিলিটারি আমাদের বিএসএফ আসবে। তখন দেখি কোন বিজেপি নেতারা পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে নমিনেশন জমা দিতে যায়। তাঁর ঠ্যাংটা ব্যাঁকা করে দেওয়া হবে।”
একইসঙ্গে তৃণমূল বিধায়কের হুমকি, “২০২৪-এ বিজেপিকে গলা ধাক্কা দিয়ে দিল্লি থেকে মানুষ নামাবে। খালি বাংলার মানুষ নয়, সারা ভারতের মানুষ। কেন রাখব ওদের। একশো ঊনআশি লক্ষ কোটি টাকা দেনা। রাজ্যসভায় জানতে চাওয়া হয়েছিল এতো টাকা দেনা কী ভাবে শোধ করবে। বলছে সরকারি সম্পত্তি বেঁচে শোধ করবে। আমারা কোনওদিন কোনও সরকারকে এ ভাবে সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করতে তো দেখিনি। বিজেপি সরকারই সম্পত্তি বেঁচে দেনা শোধ করবে। তাকে আমরা দিল্লিতে রাখব?”
তৃণমূল বিধায়কের এই বক্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতির উত্তাপ চড়তে শুরু করেছে। কী ভাবে একজন জন প্রতিনিধি প্রকাশ্য এ ধরনের কথা বললেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “এসব হুমকি দিয়ে গায়ের জোর খাটানোর চেষ্টা করে কোনও লাভ নেই। এত সাহস থাকলে ভোটের পরে পালিয়ে গিয়েছিলেন কেন?”
বিজেপির বক্তব্য, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তৃণমূল যে মিথ্যাচারণ করছে তাদের দলের বিধায়কদের এ ভাবে হুমকির রাজনীতি তা স্পষ্ট করছে। বিধানসভা ভোটের আগেও তৃণমূলের এক জনপ্রতিনিধিকে এ ভাবেই প্রকাশ্যে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছিল। চোপড়ার পরপর তিনবারের বিধায়ক হামিদুল রহমান ভোটারদের কার্যত হুমকির সুরে সেই সময় বলেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে যারা ভোট দেবে না, নির্বাচনের পর তাদের দেখে নেওয়া হবে। হামিদুলের বক্তব্য ছিল, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। আর যারা বেইমানি করেন ভোটের পরে তাদের সঙ্গে দেখা হবে।” বিজেপির দাবি, বিধানসভা ভোটে যে আবহ বাংলায় তৈরি হয়েছিল, আগামী পঞ্চায়েত ভোটেও সেই পরিস্থিতি তৈরিরই চেষ্টা করছে শাসকদল। আরও পড়ুন: কংগ্রেসকে নিয়েই জোট! তবে ‘হঠাৎ ফোনে বলে দিলাম, চলে আসুন… এটা চলবে না’, সাফ বার্তা তৃণমূলের