দিনহাটা: বাম আমলে’বাবা চাকরি দিয়েছেন, আমিও সুপারিশ করেছি’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর (Udayan Guha) এহেন মন্তব্যের পর তোলপাড় হয় রাজনৈতিক মহল। নিয়োগ দুর্নীতির কাঁটায় বিদ্ধ শাসকদলের নজরে উঠে আসে একের পর এক তৎকালীন বাম নেতামন্ত্রীদের নাম। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিস্ফোরক উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। এবার তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা জ্যোতি বসুকে। উদয়নের দাবি, সেকেন্ড ডিভিশনে পাশ করা সিপিএম নেতার পুত্রকে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাইয়ে দিয়েছেন জ্যোতি বসু।
বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই চিরকুট বিতর্কে চলছে রাজনৈতিক চর্চা। প্রাক্তন বাম আমলের নেতৃত্বরা যাঁরা বর্তমানে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা তাঁরাই বাম আমলে দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে বলছেন ক্রমাগত। ইতিমধ্যেই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বেশ কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেছেন উদয়ন গুহ। শনিবার (১ জানুয়ারি ২০২৩) ফের এক জনসভায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কথা প্রকাশে আনলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “জ্যোতি বসু বড় দুর্নীতি করেছেন। সেই সময় উচ্চ-মাধ্যমিকে ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করা অনেক মেধাবী পড়ুয়ারা জয়েন্টে পাশ করতে না পেরে ডাক্তারি পড়তে পারতেন না। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর কোটা ছিল দশটা ডাক্তারি ও দশটা ইঞ্জিনিয়ারিং-এর। সিপিএম নেতা মানিক দত্তের ছেলে সেই সময় সেকেন্ড ডিভিশনে পাশ করে আজকে ডাক্তার হয়েছেন জ্যোতিবাবুর কোটায়। উনি দুর্নীতি করেননি?”
উদয়নের সুরে সুর মিলিয়ে টুইট করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনিও জানতে চেয়েছেন, বাম জমানায় মুখ্যমন্ত্রী কোটায় কতজন এবং কারা জয়েন্টে পাশ না করেও ডাক্তারি পড়েছেন তার তালিকা প্রকাশ করুক সিপিএম।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক তৃণমূল হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়াতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের শাসকদল। এক প্রকার ‘অল-আউট’আক্রমণে নেমেছে তাঁরা। ঘাসফুল শিবিরের নজরে রাজ্যের প্রাক্তন শাসকদল সিপিএম। তৃমূলের মন্ত্রী থেকে শুরু করে জেলার ছোট-বড় নেতাদের মুখে এখন একটাই বুলি, ‘নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি বামেদের সময়ও হয়েছিল’। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত ইস্যুতে মন্তব্য করতে গিয়ে খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ নিজের বাবা তথা প্রাক্তন বাম মন্ত্রী কমল গুহর প্রসঙ্গও টেনে আনেন। স্পষ্ট বলেন,”আমার বাবাও চাকরি দিয়েছেন।” এমনকী নিজেও চাকরির সুপারিশ করেছেন তাও জানান। এই বক্তব্যের পরই শুরু হয় জল্পনা।
সিপিআইএম সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মহানন্দা সাহা বলেন, “অনুব্রতর অভাব বোধ থেকেই কালীঘাটের নির্দেশে এসব বলছেন উদয়ন। ED , CBI যখন কালীঘাট ও ভাইপোর দিকে প্রায় চলে গিয়েছে ঠিক সেসময় বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্যেই এই কথা বলছেন তিনি।”