মেখলিগঞ্জ: পরিবারে আর্থিক অনটন। জমি-জমা নেই। যেটুকু আয় করেন, তাতে সংসার চালানো ক্রমেই মুশকিল হয়ে পড়ছিল। বেড়ে চলছিল ঋণের বোঝা। মাথায় হাজার রকমের দুশ্চিন্তা। আর এসবের মধ্যেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন মেখলিগঞ্জের জামালদহ এলাকার দ্বারিকামারী বটতলার ভোলা হাজরা। বয়স বছর চল্লিশের আশপাশে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার ভোরে। পরিবারের লোকেরা তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। কিন্তু তাঁর দেহ হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে আনার টাকা নেই পরিবারের হাতে।
এমন অবস্থায় শিলিগুড়ি থেকে ভোলা হাজরার দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে এনে সৎকারের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়েছেন এলাকার মহিলারা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করছেন তাঁরা। দল বেঁধে গ্রামের মহিলারাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তুলছেন। বিষয়টি জানতে পেরে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। ওই সংগঠনের তরফে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারীও মৃতের পরিবারকে সবরকমভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন।
মৃত ভোলা হাজরার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে , মঙ্গলবার ভোররাতে বিষ পান করে আত্মঘাতী হন উত্তর দ্বারিকামারী বটতলার বছর ৪০-এর ভোলা হাজরা। চরম আর্থিক অনটনে ভুগছিলেন তিনি। জমি জমা নেই। যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছিল। ঋণের বোঝা বাড়তে থাকায় বাড়ছিল মানসিক অবসাদ। পরিবারের অনুমান, সেই মানসিক অবসাদ থেকেই হয়ত এই চরম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি। দুই শিশু রয়েছে ভোলা হাজরার। পিতৃহারা ওই দুই শিশুর আগামী দিন কীভাবে চলবে, তা ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেন না মৃতের বৃদ্ধ বাবা। ঘটনার আকষ্মিকতায় হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারাও। হঠাৎ করে এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।