হিলি: গুরুগ্রাম থেকে এ রাজ্যে এসে তিন কিশোরীকে মোবাইল উপহার দিয়েছিলেন এক মহিলা। তারপরই যত কাণ্ড বলে অনুমান পরিবারের। কারণ গত সোমবার থেকে তিন জন কিশোরীর মধ্যে দু’জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। দুই পরিবারেরই অভিযোগ, পাচার করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার ধলপাড়া পঞ্চায়েতের চাপাহাট গ্রামের ঘটনা। নিখোঁজ হওয়া দুই কিশোরীর নাম পিপাসা বিশ্বাস (১৭) ও সোমা ভুঁইমালি (১৫)। দুজনই দশম শ্রেণির পড়ুয়া। পরিবারের অভিযোগ, গত সোমবার সকালে স্কুলের উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে দু’জনেই বেরিয়ে যায়। কিন্তু বিকেলে পর থেকে পরিবারের সদস্যরা তাঁদের কোনও খোঁজ পান না। হন্যে হয়ে খোঁজাখুঁজির পরে ওই দিন রাতেই হিলি থানায় দ্বারস্থ হয় পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে পিপাসা ও সোমার অপর এক বান্ধবী বিউটি মালিকে। তখনই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিউটি পুলিশকে জানায়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় হরিয়ানা থেকে গ্রামে এসেছিলেন নিয়তি মালি নামে এক মহিলা। জানা গিয়েছে নিয়তির বাবা চাপাহাট গ্রামের বাসিন্দা। নিয়তি বিউটি সহ সোমা ও পিপাসাকে তিনটি মোবাইল উপহার দেয়। এই তথ্য জানার পর থেকে অপহৃত কিশোরীদের পরিবার সন্দেহ,পাচারের অভিপ্রায় নিয়ে ওই দুই কিশোরীকে অপহরণ করা হয়েছে।
বিউটি মালি বলে, “ওই মাহিলা আমাদের মোবাইল দিয়েছিল। তারপর মোবাইলটি লুকিয়ে রেখেছিলাম। পরে মায়ের হাতে ধরা পড়ে যাই। তখন পরিবারের সকলে আমাকে বোঝায় ৷ তারপরে মোবাইল ফেরত দিয়ে দিই। উনি আমাকে শুধু বলেছিল, মোবাইল নিয়ে ভাল করে চলবি। পরিবারের সকলের কাছে মোবাইল রয়েছে,তোর কাছেও একটা রাখ।”
এ বিষয়ে পিপাসা বিশ্বাসের মামা সুজয় মহন্ত বলেন, “সোমবার থেকে আমার ভাগ্নী ও ওর বন্ধু নিখোঁজ হয়ে রয়েছে। অনেক খোঁজ করার পরে হিলি থানায় অভিযোগ জানাই। চাপাহাট গ্রামেরই মেয়ে নিয়তি মালি। বৈবাহিক সূত্রে গুরুগাঁয়ের বাসিন্দা। শুনছি ও চক্রান্ত করে মোবাইল উপহার দিয়েছিল। তারপরই বাচ্চা মেয়েগুলোকে ফাঁদে ফেলে পাচারের যড়যন্ত্র করেছে।”
সোমা মালীর দাদু শ্রীবাস মালী বলেন, “বাচ্চা মেয়েগুলোকে মোবাইলয়ের প্রলোভন দিয়ে নিয়ে গিয়েছে৷ আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। আমাদের মেয়েকে সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরিয়ে দিতে পুলিশের কাছে প্রার্থনা করছি।”
হিলি থানার আইসি গণেশ শর্মা বলেন, “পুলিশ তদন্ত করছে। গ্রামে গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মেয়েগুলোর মোবাইলের ডেটা কালেকশনের কাজ চলছে। পাচারের বিষয়টিকেও গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷”