কুশমণ্ডি: একাধিক মৃত ব্যক্তির নামে রয়েছে সক্রিয় রেশন কার্ড৷ শুধু মৃত ব্যক্তি নয়, বহু ভুয়ো নাম দিয়ে রেশন কার্ড বানানোর অভিযোগ উঠল এক রেশল ডিলারের বিরুদ্ধে। একটি-দুটি নয়, প্রায় হাজার খানেকের বেশি এমন ভুয়ো রেশন কার্ড তৈরির করার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের বাসইল এলাকার এক রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে৷ ঘটনা জানাজানি হতেই পুরো তথ্য দিয়ে মঙ্গলবার অভিযোগ দায়ের করা হল জেলা খাদ্য দফতর, জেলা শাসক ও মহকুমা শাসককের কাছে৷ অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে জেলা খাদ্য দফতর। যদিও ভুয়ো রেশন কার্ড রাখার কথা অস্বীকার করেছেন অভিযোগ ওঠা রেশন ডিলার কুমার কুমার পাল৷ তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এছাড়াও একই নামে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ডবল ডবল কার্ড রয়েছে। আরও অভিযোগ, রেশন ডিলারের কাছে বহু ভুয়ো রেশন কার্ড এর উপভোক্তা রয়েছে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে মঙ্গলবার বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা খাদ্য দফতরে অভিযোগ দায়ের করলেন কুশমণ্ডি ব্লকের বাসইল গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই রেশন ডিলার বেআইনিভাবে কার্ডগুলিকে সক্রিয় করে রেখে তাঁদের রেশন তুলে নিচ্ছে। এদিন ওই গ্রামের বাসিন্দারা পুরো তথ্য সহ অভিযোগ দায়ের করেছে। যদিও বা অভিযোগ ওঠা ওই রেশন ডিলার পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে, কিভাবে ওই মৃত ব্যক্তিদের রেশন কার্ড এখনও সংক্রিয় এবং মৃত ব্যক্তির আধার লিঙ্ক করাল কে? তা তদন্ত করছে জেলা খাদ্য দফতর।
জানা গিয়েছে, ওই অভিযোগ পত্রে ২৩ জন মৃত ব্যক্তির তালিকা রয়েছে, যাদের কেউ ১০, ১৫ বা ২০ বছর আগে মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যুর দিনক্ষণ সহ কার্ডের বিবরণ পেশ করে ওই যুবকরা। এছাড়াও ১১ জনের নামে ডাবল কার্ড পাওয়া গিয়েছে। কোনও কার্ড এএওয়াই আবার কোন কার্ড আরএসকেএসওয়াই সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির রয়েছে। এছাড়াও ১৩৭ জনের ভুয়ো নামের কার্ড নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। এদের কেউ চেনে না বা ভুল নামের কার্ড রয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আসা মাত্রই জেলা খাদ্য দফতর নড়েচড়ে বসেছে। বছর খানেক আগে জেলায় রেশন ও আধারের লিঙ্ক শুরু হয়। সেই সময় আধার লিঙ্ক না হওয়ায় এমন লক্ষাধিক রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল। কিন্তু তবুও সেই কার্ড কোথা থেকে এল তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা খাদ্য দফতরের মুখ্য খাদ্য নিয়ামক ফুরবা ভুটিয়া বলেন, “এবিষয়ে আজকে আমার কাছে ওই গ্রামের কয়েকজন যুবক অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি গুরুতর। সবই তদন্ত করে দেখা হবে।” অন্যদিকে জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, “কিছু আগেই তিনি এই অভিযোগ পেয়েছেন। পুরোটা এখনও পড়ে দেখেননি। অনেকে মিলে অভিযোগ দিয়েছেন সেই জন্য তা খতিয়ে দেখা হবে খাদ্য দফতরের তত্ত্বাবধানে। যদিও এখন ভুয়ো রেশন কার্ডে আধার লিঙ্ক করা মুশকিল৷ তবু অভিযোগ হওয়ায় পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে৷ পাশাপাশি অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অন্যদিকে অভিযোগ ওঠা ওই রেশন ডিলার কমল কুমার পাল ফোনে বলেন, “এই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। মৃত ব্যক্তির রেশন কার্ড আমরা অফিসে পাঠিয়ে দেয়। অফিস থেকেই নিষ্ক্রিয় করে দেয়। তাছাড়াও এখন আঙুলের ছাপ দিয়ে রেশন দেওয়া হয়। তাহলে কিভাবে সেই রেশন আমি তুলে নেব? কে কেন এই ভুয়ো অভিযোগ করছে, জানি না।”