দক্ষিণ দিনাজপুর: ভোটের আগে দফায় দফায় তপ্ত হচ্ছে বালুরঘাট (Balurghat) শহর। অভিযোগ উঠছে, এক দলের প্রচারে বাধা দিচ্ছে অন্য দল। পতাকা-ফেস্টুন নষ্ট করার অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে। শনিবার রাতে বালুরঘাট শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলপুর কেজি স্কুল সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূলের ফেস্টুন নষ্ট করাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অভিযোগ, তৃণমূলের পতাকা ছিঁড়ে তা নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। এমনকী এলাকার সক্রিয় তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে হামলাও চালানো হয়। পাথর ছুড়ে বাড়ির জানলার কাচ ভেঙে ফেলা, দরজার লাথি মারারও অভিযোগ উঠেছে। রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সুরজিৎ সাহা। খবর দেওয়া হয় বালুরঘাট থানায়। বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছয় এলাকায়। মাঝ রাতে এমন ঘটনায় স্বভাবতই এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালেও থমথমে ছিল এলাকা। এদিনও এলাকায় যান তৃণমূল প্রার্থী সুরজিৎ সাহা। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অভিযোগ, বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতেই হামলা চালানো হচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, বাম ও বিজেপি এখানে হাতে হাত মিলিয়ে হিংসার আবহ তৈরি করছে। পায়ের নীচে মাটি না পেয়ে তারা ভোটারদের ভয় দেখাতে চাইছে বলেও অভিযোগ তৃণমূলের। যদিও এসব কথা ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে বাম প্রার্থী ও বিজেপি প্রার্থী।
এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী নন্দিনী লাহা বলেন, “রাত প্রায় ১টা বাজে তখন। আমি দোতলা থেকে দেখি কতগুলো ছেলে বাড়ির সামনে মাস্ক পরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওরা বেছে বেছে তৃণমূলের পতাকা, ফেস্টুন ছিঁড়ছে। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। ভেবেছি আমাদের দলের কেউ হবে। এক দেড় ঘণ্টা পর বাইরে বীভৎস আওয়াজ। মনে হচ্ছে সবকিছু ভেঙে ফেলছে। দেখি রাস্তায় যে লাইট সেগুলিকে ভাঙছে। আমার দোতলার জানলার কাচ ভেঙেছে। প্রত্যেকটা বাড়িতে লাথালাথি করছে। পাড়ার সকলে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। পরে বুঝলাম আমরা যারা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত তাদের বাড়িতে বেছে বেছে এই হামলা হয়েছে। আমাদের দলের পতাকা রাস্তায় পড়ে আছে, ড্রেনে পড়ে আছে। আমাদের প্রার্থীর নামে যে হোর্ডিং দেওয়া হয়েছিল কিছুই নেই।”
৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির যিনি প্রার্থী রঞ্জিতকুমার মণ্ডল বলেন, “বিজেপির এই সংস্কৃতি নেই। বরং আমার তো মনে হয় তৃণমূলের এই মুহূর্তে যে অন্তর্কলহ চলছে, এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। যারা মনোনয়ন পাননি, তাঁদের মধ্যে কারও কারও ক্ষোভ বিক্ষোভের পরিণতি এটা হতে পারে। তা না হলে শুধু তৃণমূলের পতাকাই ছিঁড়বে কেন, অন্যদেরও তো রয়েছে!” ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে বলতে পারব না। কারণ সকালে শুনেছি আমাদেরও পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমাদের লোকজন কোথায়? এটা শাসকদলেরই কাজ হবে। ”
আরও পড়ুন: AMTA Student Death: রহস্য পরতে পরতে! আনিসের মৃত্যুর তদন্তে ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক