গঙ্গারামপুর: হুগলির ধনেখালি, ফুলিয়া, শান্তিপুর! তাঁতের শাড়ির নাম শুনলেই মনে পড়ে যায় এই সব জায়গার কথা। তবে জানেন কি উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরও রয়েছে এই তালিকায়। একটা সময় এই শিল্পের কদর থাকলেও এখন তা বিলুপ্তির পথে ৷ বিগত বেশ কয়েক বছর থেকে গঙ্গারামপুরের তাঁত নিজের অস্তিত্ব কোনও রকমে টিকিয়ে রেখেছেন। কারণ তাঁত বুনে রোজগার দিন দিন কমছে। তাঁতের শাড়ি বিক্রির উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। যার ফলে এই পেশা থেকে অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগ, সরকারি ভাবেও সেভাবে মেলে না সহযোগিতা। সরকারিভাবে টেক্সটাইল হাব করা হলেও সেটিও বর্তমানে অচল৷ সামনেই লোকসভা ভোট। তাই আবার একবার স্বপ্ন দেখছে গঙ্গারামপুরের তাঁতশিল্পীরা ৷ এবার যদি তাদের ভাগ্য ফিরে। যদিও তাঁত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের দাবি ৬৪ কোটি টাকা কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হলেও তার কাজ হয়নি ৷ এবারে সাংসদ হলে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। অন্যদিকে ভুল তথ্য দিচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল৷
একটা সময় গঙ্গারামপুর তাঁতিপাড়া জুড়ে খটখট শব্দ শুনেই সকালের ঘুম ভাঙতো স্থানীয়দের। বর্তমানে সেই শব্দ দিন দিন কমতে শুরু করেছে। একটা সময় পুজোর আগে তাঁতিপাড়া জুড়েই দিন রাত এক করে কাজ চলত। মাকু হাতে শাড়ি বোনার হস্তচালিত তাঁতের সেই শব্দ আজ ফিকে হতে বসেছে। যদিও হাতের বদলে এখন স্বয়ংক্রিয় মেশিন দ্বারা শাড়ি বোনা হয় ৷
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর এলাকার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প আজ একাধিক প্রশ্নচিহ্নের মুখে। কদর কমেছে তাঁত শিল্প ও শিল্পীদের। বাপ ঠাকুরদার আমলে শুরু হওয়ায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কোনও রকমে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন গঙ্গারামপুরে কিছু মানুষ। কিন্তু এমন ভাবে হলে খুব বেশি দিন এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখা যাবে না বলেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তাঁত শিল্পীরা।
গঙ্গারামপুরের তাঁত বাজারে না চলার অন্যতম কারণ বাংলাদেশের শাড়ির পাশাপাশি আধুনিক ডিজাইনের বিভিন্ন শাড়ি বাজারে চলে আসছে। যার দাম অনেক কম। জেলায় সরকারি ভাবে সেভাবে নেই তাঁতের শাড়ি বিক্রির ব্যবস্থা। এমনকী মেলে না সরকারি সহায়তায়। ভোট এলেই শুধু মেলে প্রতিশ্রুতি। ভোট পেরলে সব আশ্বাস মিলিয়ে যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে।