বালুরঘাট: বালুরঘাটে আট বছরের নাবালকের দেহ উদ্ধার ঘটনায় সোমবারও থমথমে পরিবেশ। সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনার রয়েছে সেখানে। নতুন করে যাতে কোন উত্তেজনা না তৈরি হয় ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে এখনও বিশাল পুলিশ বাহিনী। গতকাল রাত্রিবেলাই অভিযুক্ত মানস সিং-সহ পরিবারের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ অভিযুক্ত চারজনকেই বালুরঘাট জেলা আদালতে পেশ করা হবে। জানা গিয়েছে, নাবালকের ময়নাতদন্ত হবে বালুরঘাট হাসপাতালে। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত মানস সিং নেশা করে থাকত। আজও তার বাড়ি থেকে নানা ধরনের মদের বোতল উদ্ধার হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নানা ধরনের সমাজ বিরোধী কাজের সঙ্গেও যুক্ত থাকত মানস। এমনকী চুরির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মানস সিং-এর সমস্ত কিছুই জানত তার পরিবার। সেই কারণে এলাকাবাসী অভিযুক্তের বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে।
গতকাল জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, ঘুড়ি নিয়ে বিবাদের জেরে এই খুন হয়েছে। যদিও, পুলিশের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে এলাকাবাসী। তাঁদের বক্তব্য পাচার করতে না পেরেই ওই নাবালককে খুন করেছে মানস।
প্রসঙ্গত, রবিবার আট বছরের নিখোঁজ নাবালক দেহ উদ্ধারকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বালুরঘাট । নিহতের নাম দীপ হালদার। রবিবার একটি খাঁড়ি থেকে বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয় ওই নাবালকের। এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রতিবেশি এক পরিবারকে গ্রেফতার করা হয়। মূল অভিযুক্ত মানস সিং এবং তাঁর মা, বাবা, বোনকে গ্রেফতার করে তপন থানার পুলিশ। পরে তাঁদের তুলে দেওয়া হয় বালুরঘাট থানার পুলিশের হাতে।
বালুরঘাটের গোপালন কলোনিতে দীপ থাকত ঠাকুমার কাছে। বাবা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। মা নেই। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। পরিবারের অভিযোগ, দীপকে অপহরণ করেছিল প্রতিবেশী মানস সিংহই। রবিবার দুপুরে বালুরঘাট থানায় মানসের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের হয়। এরপরই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তপন থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় চার জনকে। তাঁদের জেরাতেই জানা যায়, মানসের বাড়ির পাশে আত্রেয়ী নদীর খাঁড়িতে পড়ে রয়েছে দীপের মৃতদেহ। এমনও অভিযোগ ওঠে, বাড়িতে তেমন অভিভাবকের জোর না থাকায় দীপকে অন্যত্র পাচারের পরিকল্পনা করছিলেন অভিযুক্ত। তাতে বাধা পেতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়।