কুশমণ্ডি: বছর পাঁচেক আগে বিয়ে হয়েছিল। এক সন্তানও রয়েছে। তবে কারণে-অকারণে অশান্তি লেগেই থাকত। এমনকী, টাকার জন্য তাঁর উপর অত্যাচার করা হত বলেও খবর। কিন্তু পরের পরিণতি ভয়ঙ্কর। গৃহবধূকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ি বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সিভিক ভলান্টিয়র স্বামীকে গ্রেফতার করল কুশমণ্ডি থানার পুলিশ। মৃত গৃহবধূর নাম তাজনুর বেগম (২১)। বাপের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের রানিপুকুর এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে কুশমণ্ডি ব্লকের নরুল্লাকুড়ি এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে। বুধবার দুপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাজনুর বেগমের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের হাত থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি মৃতের শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল বলে খবর। এদিকে, পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান উত্তেজিত জনতা। এমনকী, পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন উত্তেজিত জনতা ৷ পরে এনিয়ে থানায় অভিযোগ হতেই অভিযুক্ত স্বামী আমিনুর ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি বুধবার বিকেলে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পুলিশ মর্গে পাঠিয়েছে কুশমণ্ডি থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, প্রায় বছর পাঁচেক আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের নরুল্লাকুড়ি এলাকার পেশায় সিভিক ভলান্টিয়র আমিনুর ইসলামের সঙ্গে দেখাশোনা করেই বিয়ে হয় রানিপুরের তাজনুর বেগমের। তাঁদের একটি আড়াই বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই নানা কারণ অকারণে তাজনুর বেগমের উপর অত্যাচার করা হত। এমনকী টাকার জন্য মারধর করা হত। শুধুমাত্র স্বামী নয়, শ্বশুরবাড়ির অন্যরাও অত্যাচার চালাত। শ্বশুরের কাছে থাকা জমি বন্ধকের টাকা কিছুদিন আগে ফেরত চায় জামাই আমিনুর।
গতকালই সেই টাকা ফেরতও দেয়। এরপরই বুধবার দুপুরে প্রতিবেশী মারফত জানতে পারেন মেয়ে মারা গিয়েছে। এদিকে, অবস্থা বেগতিক দেখেই মৃতার শাশুড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয় ৷ এবং পরে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় ৷ পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু অভিযুক্তকে না ধরেই ছেড়ে দেয়। তখনই উত্তেজিত জনতা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় ৷ তখনই পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এনিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার ৷
এনিয়ে মৃতের আত্মীয় মনসুর রহমান ও সোভান আলি বলেন, আমাদের মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। শরীরে ক্ষত চিহ্ন আছে ৷ মেয়ের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে ছিল। মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয় ৷ স্বামীর যেন আবার বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু মেয়ের হাতে যে সুইসাইড নোট ছিল তা ওর লেখা নয়। জামাইয়ের লেখা। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে এমনটা চিঠি লিখেছিল। দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ৷
অন্যদিকে কুশমণ্ডি থানার আইসি তপন পাল জানিয়েছেন, খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয় এবং তাঁদের উপর চড়াও হয় স্থানীয়রা। অভিযোগ ওঠা যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।