বালুরঘাট: হাসপাতালের বাইরে কয়েকজন এলেন। তারপর তাঁরা একটি এক যুবককে রেখে চলে যান। তখনও বুঝে ওঠা যায়নি ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে নাকি বেঁচে আছেন। পরবর্তীতে খতিয়ে দেখা গেল মৃত্যু হয়েছে যুবকের। অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য দেখা দিল হাসপাতালে। মৃতের শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন থাকায় পুলিশ ও হাসপাতালের প্রাথমিক অনুমান ওই যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এ দিকে, বিষয়টি হাসপাতালের নজরে আসতেই বালুরঘাট থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়৷ পরে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে পাঠায়। কীভাবে ওই যুবকের মৃত্যু হল তা খতিয়ে দেখছে বালুরঘাট থানার পুলিশ৷ পাশাপাশি মৃতের নাম পরিচয় জানার চেষ্টাও করছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে কিছুজন মিলে এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের দেহ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রেখে চলে যায়। এ দিকে, বিষয়টি হাসপাতাল কর্মীদের নজরে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রথমে জীবিত ভেবেছিলেন স্বাস্থ্য কর্মীরা৷ কিন্তু কাছে যেতেই দেখেন ওই যুবক মারা গিয়েছেন৷ এরপরই হাসপাতাল কর্মীরা খোঁজ খবর শুরু করেন কারা দেহটি এনেছিল। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই বেপাত্তা হয়ে যান রোগীর পরিজনরা।
অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবকের আনুমানিক বয়স প্রায় ৩৫ বছর। মৃতদেহের শরীরে বুকে ও পিঠে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যা থেকে চিকিৎসকদের অনুমান তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এছাড়াও একাধিক জায়গায় পোড়া দাগও রয়েছে বলে অনুমান চিকিৎসকদের। এ দিকে, বালুরঘাট থানার পুলিশ তদন্তে নেমেছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়াও ইতিমধ্যেই পুলিসের তরফে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন থানাতে ওই যুবকের ছবি পাঠানো হয়েছে। কোথাও কোন নিখোঁজের খবর রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রোজ প্রচুর রোগী আসে। সকাল হলেই রোগীর আত্মীয়রা রোগীদের দেখতে ভিড় জমায় হাসপাতাল চত্বরে। এরপরেও কে বা কারা কিভাবে ওই মৃতদেহটি ফেলে পালিয়ে যায়। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে। যদিওবা পুরো বিষয়টি পুলিশের তরফে দেখা হচ্ছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর আত্মীয় সুলামান খেশ বলেন, ‘আজ হাসপাতালে এসে বিষয়টি জানতে পারেছি। কেউ মৃতদেহটি ফেলে রেখে চলে গেছে। মৃতদেহটি দেখে যা মনে হল তা থেকে ওই যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তা পরিস্কার৷ পুলিশের কাছে আবেদন পুরো বিষয়টি যাতে খতিয়ে দেখে৷’
এ বিষয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, শুক্রবার সকালে কে বা কারা হাসপাতালে ভর্তি করার আগে জরুরি বিভাগে সামনে এক যুবকের মৃতদেহ ফেলে দিয়ে পালিয়ে গেছে। ওই যুবককে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় দাগ দেখে মনে হচ্ছে তাকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। কিভাবে ওই মৃতদেহ কোথা থেকে হাসপাতালে এল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মূলত হাসপাতালে ভর্তি হলে পরে রোগীর সব তথ্য রাখা হয়। আর মৃত অবস্থায় এলে সেই তথ্য পুলিশ রাখে। যার ফলে এই ক্ষেত্রেই মৃতের নাম পরিচয় পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বলেন, ওই অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কারা ওই মৃতদেহটি সেখানে ফেলে পালিয়ে গেল তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। খুন না অন্যকিছু তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।