বালুরঘাট: প্রায় দু’বছর হতে চলল করোনায় (Corona) জর্জরিত গোটা দেশ। ক্রমাগত বেড়েছিল আক্রান্তের সংখ্যা। শুধু তাই নয়, গোটা দেশে করোনার বলি হয়েছিলেন প্রচুর স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে চিকিৎসকরা। তবে এই বছর পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। করোনার শক্তি কমাতে বাজারে এসে ভ্যাকসিন (Corona Vaccine)। কিন্তু তাতে সামগ্রিক সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। তবে উদ্বেগ বাড়িয়েছে মৃত্যু। বাদ পড়েননি চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা। জেলায় ফের চিকিৎসকের মৃত্যু। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ফের করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকের মৃত্যু হল। গতকাল রাতে বালুরঘাটে কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মৃত ওই চিকিৎসকের নাম কৌশিক ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তাঁর বাড়ি বোলপুরে (Bolpur) হলেও দীর্ঘদিন ধরেই বালুরঘাট (Balurghat) থাকেন।
জানা গিয়েছে, গত ৪ নভেম্বর করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। প্রথম অবস্থায় তিনি হোম আইসোলেশনে ছিলেন। কিন্তু গতকাল দুপুরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় তাঁর। তৎক্ষনাত ভর্তি করা হয় বালুরঘাট কোভিড হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যান তিনি।
জানা গিয়েছে, কৌশিকবাবু বালুরঘাট হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। এদিকে, চিকিৎসকের মৃত্যুতে মঙ্গলবার সকাল থেকে বালুরঘাট হাসপাতাল সংলগ্ন বিভিন্ন ডাক্তারদের চেম্বার বন্ধ রাখা হয়েছে ৷ সেই কারণে আজ কোনও ডাক্তার প্রাইভেটে রোগী দেখছেন না। দুঃখজনক ঘটনা বলেছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুকুমার দে।
এদিকে চিকিৎসকের এই মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন। তাহলে কি ফের ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে করোনার প্রকোপ?
চিকিৎসক কাজল কৃষ্ণ বণিক বলেন, “আমরা ডাক্তাররা কোথাও বলিনি করোনা সংক্রমণ নেই। বা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা শুধু বলেছি করোনা কিছুটা শক্তি কমেছে। এই মহুর্তে দরকার ছিল সর্বস্তরের মানুষের আমাদের সচেতনতামূল কথা শুনে চলা। প্রশাসনকে বারবার বলেছিলাম শক্তহাতে মানুষ যাতে করোনা বিধি মেনে চলে তা আপনারা নজরে রাখুন। কিন্তু কনও একটা জায়গায় জেনেবুঝে বা না জেনে কিন্তু কোনও কর্ণপাত করেননি। একাধিক উৎসবের আয়োজন হয়েছে। মানুষ দলে দলে সেই উৎসবে যোগ দিয়েছেন। যার জেরে রাজ্যে বেড়েছে সংক্রমণ। এখন টেস্ট বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাকসিনেশের হার বাড়াতে হবে। তবেই সংক্রমণ রোখা সম্ভব হবে। এই ডাক্তারবাবুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল আমার পক্ষ থেকে।”
প্রসঙ্গত, একদিনের সংক্রমণ কিছুটা কমলেও দৈনিক মৃত্যু ও পজিটিভিটি রেট কিন্তু উদ্বেগেই রাখছে। সোমবার স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬০৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। পজিটিভিটি রেট ২.৫১ শতাংশ।
উল্লেখযোগ্য ভাবে সুস্থতার সংখ্যাও গত ২৪ ঘণ্টায় কমেছে। রবিবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান ৭৭৪ জন। সোমবার সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫৭-এ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার ৯৮.৩০ শতাংশ। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৪ হাজার ১৬টি। রবিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, একদিনে মৃত্যু হয় ১১ জনের। পজিটিভিটি রেট ছিল ২.৪০ শতাংশ। নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৩০ হাজার ১২৪টি। গতকাল দক্ষিণ দিনাজপুরে আক্রান্ত ২৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ২৯ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে ওঠেন ১৫ জন।
আরও পড়ুন: Weather Update: শহর জুড়ে হিমেল পরশ কিন্তু তা আর এক দিনের অনুভূতি! ফের বদলাতে চলেছে আবহাওয়া…