বালুরঘাট : খাতায় কলমে জেলা পুলিশ হাসপাতাল। কিন্তু, প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নেই কোনও চিকিৎসক ও নার্স। যার ফলে বালুরঘাট জেলা পুলিশ হাসপাতালের ইন্ডোর পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে শুধু কোনওরকমে আউটডোর পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মী। যেখানে আগে রোগী রাখা হত, সেই ঘরগুলিতে পুলিশ কর্মীরা রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন পুলিশ কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের অন্য কোনও হাসপাতালে কিংবা বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। যদিও পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের জন্য জেলা পুলিশের তরফে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনা ও আবেদন করা হয়েছে।
জেলার পুলিশ কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। নয়ের দশকের শেষে এই হাসপাতাল তৈরি করা হয় বালুরঘাট পুলিশ লাইন সংলগ্ন এলাকায়। জেলার পুলিশ কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয় হাসপাতালটি। এছাড়াও এই হাসপাতালে বিচারাধীন বন্দিদেরও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এদিকে উন্নতমানের হাসপাতালে পরিষেবা দিতে ২০০০ সালে ইউএসজি-সহ অন্যান্য পরিষেবা চালু করা হয়। এখানে আগে একজন চিকিৎসক নিয়মিত বসতেন। এছাড়াও থাকতেন নার্স। পাশাপাশি থাকতেন অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে পুলিশ হাসপাতালে নেই কোনও চিকিৎসক ও নার্স। বর্তমানে পুলিশ হাসপাতালে ১৩ জন কর্মী রয়েছেন। যাঁরা সকলেই পুলিশ কর্মী। বর্তমানে এই হাসপাতালে শুধুমাত্র আউটডোর পরিষেবা রয়েছে। যেখানে প্রেসার মাপা থেকে অন্যান্য ওষুধ দেওয়া হয়। এই ওষুধ শুধুমাত্র স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়।
একটা সময় এই হাসপাতালে রোগীদের ভর্তি করানো হত। এবং চিকিৎসার জন্য একাধিক শয্যাও ছিল। তবে সেগুলো বর্তমানে তুলে রাখা হয়েছে। আর বেশির ভাগ বিভাগ ও অফিস রুম তালা বন্ধ। তালাতে ধুলো জমেছে। এদিকে বর্তমানে পুলিশ হাসপাতালের সামনের বোর্ড পর্যন্ত নেই। মূল রাস্তাটি বাঁশ ও টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া রয়েছে।
এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, পুলিশ হাসপাতাল হলে চিকিৎসক নিয়োগ করা হয় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স নেই। চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে চিকিৎসক নেই। যার ফলে একটা সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা কবে মেটে সেটাই এখন দেখার। অন্যদিকে এবিষয়ে উত্তরবঙ্গের আইজি দেবেন্দ্র প্রসাদ সিং বলেন, হাসপাতালটি চালুর জন্য সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুকুমার দে বলেন, চিকিৎসক সংকট জেলাজুড়ে রয়েছে। যিনি পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি অবসর নিয়েছেন। যার ফলে হাসপাতালে নতুন করে চিকিৎসক দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।