দক্ষিণ দিনাজপুর: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যে স্কুলঘরেই উদ্ধার হল এক স্কুলশিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারী নুরপুর এলাকায়। মৃতের নাম কৃষ্ণ বসাক (৪৭)। তাঁর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কৃষ্ণের বাড়ি বংশীহারীর বাতাসকুড়িতে৷ জানা গিয়েছে, কৃষ্ণ কয়েক মাস আগেই কুশমণ্ডির একটি স্কুল থেকে বদলি হয়ে বংশীহারী ব্লকের নুরপুর জুনিয়র হাইস্কুলে কাজ যোগ দেন। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, রবিবার সকালে রোজকার মতই বাড়ি থেকে বের হন তিনি। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ করেন তাঁরা। খবর পান স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁরাও খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। নুরপুর এলাকার বাসিন্দারা দেখেন স্কুলের সামনে একটি মোটরবাইক রাখা রয়েছে৷ তবে সেখানে কেউ নেই৷ মোটরবাইকটি দেখে চিনতেও পারেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্কুলের বাইরে থেকেই অনেক ডাকাডাকি করতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কোনও সাড়া না পাওয়ায় অবশেষে তাঁরা স্কুলের ভেতর ঢোকেন। ক্লাসরুমের ভিতরেই কৃষ্ণ ‘স্যর’-এর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বংশীহারী থানার পুলিশ। দেহটি স্কুল থেকে রসিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়৷
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণ বসাকের দুই বিয়ে। প্রথম স্ত্রী দেবিকা জোয়াদারের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে থেকে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। যা নিয়েই অশান্তি। এদিকে পরে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত। অভিযোগ, প্রথম পক্ষের স্ত্রী নানাভাবে মানসিক চাপ তৈরি করছিলেন তাঁর ওপর।
এরপর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গেও এই সব ইস্যুতে ঝামেলা হতে থাকে। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন কৃষ্ণ। পরিবারের লোকজন কৃষ্ণের প্রথম পক্ষের স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন।
মৃতের আত্মীয় ক্ষিতিগোপাল বসাক বলেন, “প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে প্রায় দশ বছর ধরে। যা নিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিল। নানাভাবে চাপও তৈরি করা হচ্ছিল।”