দক্ষিণ দিনাজপুর: সোমবারই তৃণমূল জেলায় জেলায় নতুন সাংগঠনিক সভাপতির তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকা সামনে আসতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় জোর আলোচনা শুরু। এতদিন এখানে জেলা সভাপতি ছিলেন উজ্জ্বল বসাক। এবার সেই পদে এসেছেন মৃণাল সরকার। সোমবার দুপুরে রাজ্যের তরফ থেকে এমন ঘোষণা হতেই আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন নবনিযুক্ত তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার ঘনিষ্ঠরা। দলীয় কর্মী সমর্থকদের পাশাপাশি জেলা নেতৃত্বদের পক্ষ থেকেও শুভেচ্ছা জানানো হয় তাঁকে। তবে এসবের মাঝেই শাসকদলের নতুন সভাপতিকে নিয়ে সরব বাম-বিজেপি। তাদের অভিযোগ, তৃণমূলের নবনিযুক্ত জেলা সভাপতি মৃণাল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে নানা অভিযোগও ওঠে। এমন ভাবমূর্তির একজনকে শাসকদল জেলা সভাপতি করে দিল? প্রশ্ন বিরোধীদের।
সদ্য নিযুক্ত হওয়া তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকারের বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুরের বিকইর এলাকায়। মূলত কৃষক পরিবারের ছেলে তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। একাধিক পদ সামলেছেন। এতদিন গঙ্গারামপুর ব্লক সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৯ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরই গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের কোন্দলে দুই কর্মী মারা যান বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় মৃণাল সরকার-সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নামে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই সময় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারও করেন তৎকালীন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। যাকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বিরোধীরা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “একজন খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত, বারবার নাম উঠে এসেছে, তাঁকে তৃণমূল জেলা সভাপতি করে প্রমাণ করতে চাইছে তারা এদের সমর্থন করে। আগামিদিনে পঞ্চায়েত ভোটে এদের ব্যবহার করেই জেতার চেষ্টা করবে।” অন্যদিকে বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরীর বক্তব্য, “তৃণমূল দলটাই এমন, তাদের কোনও নীতি আদর্শ নেই। বড় বড় নেতা মন্ত্রীরা বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন”।
অন্যদিকে আরএসপির রাজ্য নেত্রী সুচেতা বিশ্বাস বলেন, “তৃণমূল দলের সমস্তটায় গোলমাল। কোনওটাই স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নয়। সেই জায়গায় এমন ঘটনা ঘটবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই৷ তৃণমূলের তরফে কাকে জেলা সভাপতি করা হবে সেটা তাদেরই ব্যাপার৷ এখানে তাদের কোন বিষয় নেই। তবে একটাই কথা বলার, দলটার কোনও নিয়ম নেই নীতি নেই৷”
যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বসাক বলেন, “পদ কোনওটাই চিরস্থায়ী নয়। তৃণমূলের সৈনিক হিসাবে আগেও কাজ করেছি, আগামিদিনেও করব। তবে নবনিযুক্ত জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে কী মামলা রয়েছে বা কী অভিযোগ রয়েছে, বিরোধীরাই বা কী বলছে সেটা আমার জানা নেই।”
কী বলছেন মৃণাল সরকার? তাঁর বক্তব্য, “এর আগে দলের নির্দেশেই গঙ্গারামপুরের ব্লক সভাপতি হই। আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা যথাযথভাবে পালন করব। রাজ্যের বিরোধীদের কাজই বিরোধিতা করা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বালুরঘাটের সাংসদ হয়েও তিনি কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করেননি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।”