বালুরঘাট: টার্গেট ছিল ৩০ আসন। হল না। বরং জেতা আসনও হারতে হয়েছে বঙ্গ বিজেপি-কে। শুধু হার নয়। বলা চলে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বঙ্গ বিজেপির এক সময়ের সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের মতো তাবড়-তাবড় নেতারা হেরেছেন। কীভাবে এই ফল সম্ভব? কোথাও কি ভুল ছিল? এরই উত্তর দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
টিভি ৯ বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, “পার্টির মধ্যে অবশ্যই আলোচনা করব। রাজ্য সভাপতি হিসাবে দায় তো আমারই। সব সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারিনি। কিন্তু দায় তো আমাকেই নিতে হবে। আমি পিছু পা হব না। সিদ্ধান্ত হয়ত অন্য কেউ নেবে। তবে দায় আমাকেই নিতে হবে।” ফলে, নাম না করে কার দিকে তিনি এই আঙুল তুললেন সে কথা যদিও জানা যায়নি। একই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, “আমার বিশ্বাস ছিল দিলীপদা জিতে যাবেন। উনি আমাদের সকলের নেতা। আমরা সকলে শ্রদ্ধা করি। ওনার কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্যই হয়ত হেরে গেলেন।” তবে সুকান্ত এখনও মেনে নিতে পারেননি নিশীথ প্রামাণিকের পরাজয় নিয়ে। তিনি বলেন, “নিশীথ আমার কাছে অপ্রত্যাশিত। ভেবেছিলাম সিট ঠিক বের করে নেবে। কোনও কারণে হয়ত হয়নি। পরেরবার জিতে যাবে।”
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে যখন বিজেপি ১৮ আসন জিতেছিল। সেই সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপি যে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে, তার বীজ বপন হয়েছিল দিলীপ জমানাতেই। ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এরপর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় তাঁরই নেতৃত্বে এ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে আসে বিজেপি। তারপর একুশের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে দিলীপের উত্তরসূরি হিসেবে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন সুকান্ত মজুমদার। এবারের ভোটে রাজ্য বিজেপিতে প্রধান দুই মুখ হিসেবে বার বার দেখা গিয়েছে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, নির্বাচনে কে কোথায় দাঁড়াবেন সেই বিষয়টিও ঠিক করেছিলেন শুভেন্দু। বদল করা হয় দিলীপ ঘোষের কেন্দ্র। কিন্তু ফল ঘোষণার পর দেখা গেল ৩০ আসন তো দূরের কথা, ১২ আসন নিয়েই ক্ষান্ত হল বঙ্গের পদ্ম শিবির।