তপন: দু’দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা খুঁজছিলেন তাঁকে। কিন্তু না পেয়ে শেষমেশ নিখোঁজ ডায়রি করেন পুলিশে। পরে পাটক্ষেতে তাঁকে এমন অবস্থায় দেখতে হবে তা হয়ত ভাবেননি পরিবারের সদস্যরা।
বিগত দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর তৃণমূল কর্মীর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের পাট ক্ষেত থেকে ওই কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার বিষয়টি নজরে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার হজরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাদমা এলাকায়।
মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম আদেশ বর্মণ (৫৫)। বাড়ি তপন এলাকায়। তিনি এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। রাতের অন্ধকারে তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে বলেই অভিযোগ পরিবার ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। তবে এই খুন রাজনৈতিক না অন্য কিছু তা এখনও পরিষ্কার নয়। কারণ তৃণমূলের তরফে সেভাবে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। গোটা ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তপন থানায়।
স্থানীয় এবং পরিবার সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূলের বুথ সহ-সভাপতি। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন আদেশ। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও না পাওয়া গেলে শনিবার থানায় নিখোঁজের অভিযোগ জানানো হয়। এরপরেও খোঁজাখুঁজি চলতে থাকে। রবিবার, রাত দেড়টা নাগাদ এলাকার পাট ক্ষেতে ওই ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানান, মৃতদেহের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন ছিল। ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে তা ক্ষতচিহ্ন থেকেই অনুমান স্থানীয় ও পুলিশের।
এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন, মৃত ওই ব্যক্তির নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল রাতে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঠিক কী কী ঘটনা ঘটেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মৃতের স্ত্রী জানান, ‘রাত করেই বাড়ি ফিরত। শেষবার যখন কথা হয় তখন বলে যে অনেকের সঙ্গে বসে রয়েছি পরে ফিরছে। তারপর তো এই খবর শুনলাম। ওকে মেরে ফেলা হয়েছে। শরীরে ক্ষত-বিক্ষত আঘাত রয়েছে।’স্থানীয় তৃণমূল এক নেতা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গেই ছিল অনেকক্ষণ। তারপর বাড়ি যাব বললেন। পরে শুনি এই অবস্থা। ওর গলা কাটা ছিল। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি জানা নেই। তবে যে কোনও মৃত্যুই খুবই দুঃখজনক। তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের পরিবেশ রয়েছে। এটা তার জন্যও ঘটতে পারে।’