বালুরঘাট: তিন মাস হয়ে গেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও উপাচার্য নেই। স্বভাবতই পড়ুয়াদের পঠনপাঠনেও তার প্রভাব পড়ছে। প্রভাব পড়ছে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। প্রতিবাদে এবার পথে নামলেন পড়ুয়ারা। দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Dakkhin Dinajpur University) উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে শুক্রবার বালুরঘাটের ক্য়াম্পাস ধরনায় বসেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, জেলা প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে বারবার বলেও কাজ হয়নি। তাই এবার নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে পথে বসেছেন তাঁরা। পড়ুয়াদের কথায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন অভিভাবক থাকবেন, সেটাই দস্তুর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই অভিভাবক হলেন উপাচার্য। উপাচার্য না থাকায় এখন যেমন পঠনপাঠনের সমস্যা হচ্ছে, আগামিদিনেও নানা জটিলতা তৈরি হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। যতদিন উপাচার্য না নিয়োগ হচ্ছে, এই প্রতিবাদ জারি থাকবে বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়কে নিয়োগ করা হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় পঠনপাঠন শুরু হয়। কিন্তু আদালতের নির্দেশে ১৪ মার্চ পদ থেকে সরানো হয় সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়কে। এরপর সেই পদে আর স্থায়ী কেউ আসেননি। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজভবনের তরফে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক সুরেন বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। তবে তিনি যোগ দেননি। ফলে পরিস্থিতি যেমন ছিল, তেমনই রয়ে গিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল রেজিস্ট্রার পঙ্কজ কুণ্ডু বলেন, উপাচার্য না থাকায় খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি রাজভবনেও সবটা জানানো হয়েছে। উচ্চশিক্ষা দফতর বা রাজভবন কোনও নির্দেশ না দিলে, তাঁরাও অথৈ জলে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, নামেই বিশ্ববিদ্যালয়। নিজস্ব একটা ক্য়াম্পাস পর্যন্ত নেই। অন্য কলেজে চলে ক্লাস। নিজের ভবন না থাকায় নেই হস্টেলের সুবিধাও। পরীক্ষার ফল পর্যন্ত প্রকাশ হচ্ছে না সময়ে। অর্পিতা কর্মকার, লোপামুদ্রা দত্তদের অভিযোগ, উপাচার্য, কন্ট্রোলার না থাকায় তৃতীয় সেমেস্টারের ফল প্রকাশিত হয়নি। ফলে চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষাও পিছিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের। স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে পড়বে তাঁদের ভবিষ্যৎ।