দক্ষিণ দিনাজপুর: একরত্তি মেয়ে। জিভের আড় কাটেনি এখনও। তাক লাগিয়ে দেবে পুচকির সংস্কৃত উচ্চারণ। আড়াই বছর বয়সীর এই সংস্কৃত উচ্চারণই ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে (IBR) তার নাম তুলে দিল। এই একরত্তির অবাক করা সব ক্ষমতা। অনায়াসে বলে দেয় ৫০টি ফুল-ফলের নাম। একবারও না থেমে জেড থেকে এ অবধি বলে দেয় সে। পাখি দেখেই বলে দেয় কী নাম। বালুরঘাট শহরের উত্তমাশা এলাকার প্রত্যয়ী সরকারের এমন প্রতিভা এতদিন পরিচিত-স্বজনদের মুখে মুখে ফিরত। এবার তা স্বীকৃতি পেল জাতীয় স্তরে।
প্রত্যয়ীর পরিবার ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস ২০২২—এ মেয়ের সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে আবেদন করে। শনিবার রাতেই তারা পুরস্কার, শংসাপত্র পাঠিয়েছে প্রত্যয়ীকে। প্রত্যয়ীর বাবা প্রবীর সরকার হাইস্কুলের শিক্ষক। মা পরিণীতা সরকারও শিক্ষিকা। বাড়িতে এমনিতেই পড়াশোনার চল। তার উপর সরকার দম্পতির ছোট্ট মেয়ে আলাদা প্রতিভার অধিকারী।
প্রত্যয়ীর মা জানান, মেয়ের বয়স যখন ১ বছর ২ মাস। তখন থেকেই অল্প অল্প কথা বলতে পারে। এরপর থেকে এবিসিডি, বিভিন্ন ছড়া বলতে শেখান তিনি। এরপর ফুল, ফল, পাখির নাম বলতে শেখান মা। মেয়ের এমন ক্ষমতা, কোনও জিনিসের ছবি দেখলেই তার ইংরেজি নাম বলে দিতে পারে সে। এমন ৩৫০ টি’রও বেশি সামগ্রির নাম সে জানে।
চলতি বছর ১৬ জুলাই মেয়ের এই কীর্তিকলাপ মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ২৭ জুলাই তারা সেই আবেদনে সাড়া দেয়। এরপরই শনিবার রাতে বাড়িতে এসে পৌঁছয় ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসের সার্টিফিকেট, মেডেল, কার্ড-সহ নানা উপহার।
প্রত্যয়ীর বাবা প্রবীর সরকার বলেন, “ওর মা ছোট থেকেই নানারকম জিনিস শেখাত মেয়েকে। যার ফলে এখন ও অনেক কিছুই রপ্ত করে ফেলেছে। তবে এটাও ঠিক ও কিন্তু ওর বয়সীদের থেকে একটু অন্যরকমই। খুব তাড়াতাড়ি সমস্ত কিছু শিখে ফেলেছে। যা দেখে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে আবেদন করেছিলাম। তার স্বীকৃতি এল।”
প্রত্যয়ীর মা পরিণীতা বলেন, “জোর করে শেখাতে হবে বা শিখতেই হবে, এমনভাবে নয়, আমি কিন্তু খেলার ছলে, ঘুম পাড়ানোর সময় সেই সব শেখাতাম। এখন ছবি দেখলে নিজেই সেই জিনিসের নাম বলে দেয়। এছাড়াও বাইরে নিয়ে গেলে কোনও ইংরেজি ওয়ার্ড দেখলেই উচ্চারণ করার চেষ্টা করে।” ছোট্ট নাতনির এমন সাফল্যে খুশিতে ডগমগ দাদু পরিমল সরকার। তিনি বলেন, “আমি মনে করি। ভগবানের কৃপায় আজ আমার নাতনি এখন থেকেই প্রতিভাবান হয়ে উঠেছে।”